TRENDING:

বাইক অ্যাম্বুল্যান্সে দাপিয়েছেন পাহাড়, এখন স্বপ্ন হাসপাতাল! দু'কোটি খরচেও অসম্পূর্ণ, লড়াই ছাড়েননি 'পদ্মশ্রী' করিমুল হক

Last Updated:

Karimul Haque : পাহাড়ের অ্যাম্বুলেন্স দাদা করিমুল হক। পেয়েছেন পদ্মশ্রী। এখন স্বপ্ন পাহাড়ে হাসপাতাল গড়ার। কিন্তু দু'কোটি টাকা খরচেও শেষ হয়নি কাজ। অথচ ভাঙছে শরীর।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
দার্জিলিং, ঋত্বিক ভট্টাচার্য : ডুয়ার্সের ধোলাবাড়ি গ্রাম আজ সারা দেশের কাছে এক মানবিক প্রেরণার নাম। এখানেই বাস পদ্মশ্রী করিমুল হক-এর। যিনি সকলের কাছে “বাইক অ্যাম্বুল্যান্স দাদা” নামে পরিচিত। ১৯৯৮ সালে মায়ের মৃত্যুর পরই তাঁর জীবনের পথচলা বদলে যায়। অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারার যন্ত্রণা তাঁকে শপথ করায় গ্রামে যেন আর কেউ অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে প্রাণ না হারান। তারপর থেকেই নিজের বাইকে করে শুরু হয় তাঁর বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা।
advertisement

চা-বাগানে দিনমজুরের কাজের পাশাপাশি তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন অসুস্থ মানুষের পাশে। ২০১৬’র দশকের শুরুতে যখন এই উদ্যোগের কথা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। একজন সাধারণ শ্রমিক কীভাবে বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স চালাচ্ছেন, তা অনেকের ধারণার বাইরে ছিল। কিন্তু করিমুল হকের জন্য অসম্ভব বলে কিছু ছিল না। ২০১৭ সালে এই অসামান্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু করিমুল হক এখানেই থেমে থাকেননি। তাঁর চোখে তখন আরও বড় স্বপ্ন, নিজের গ্রামে একটি হাসপাতাল গড়ে তোলা। যাতে আশেপাশের কুড়ি-পঁচিশটি গ্রামের মানুষও চিকিৎসা পাবেন।

advertisement

আরও পড়ুন : নভেম্বরে দার্জিলিং যাচ্ছেন? ম্যাল ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছা করবে না! উত্তরের ‘ট্রাডিশনাল’ খাবারের খনি, সঙ্গে দেদার শপিং

আপদেবিপদে সবসময় শহরে ছুটতে হবে না। ধোলাবাড়ি ও সংলগ্ন গ্রামগুলি থেকে সবচেয়ে কাছের বড় স্বাস্থ্যকেন্দ্র বলতে মালবাজার সাব-ডিভিশনাল হাসপাতাল। যার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে নিয়ে সেখানে পৌঁছতে লেগে যায় প্রায় দুই ঘণ্টা। সঙ্গে প্রায় চার-পাঁচ হাজার টাকা লাগে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া। অনেক সময় পথেই প্রাণ হারান রোগীরা। এই দুর্গম পরিস্থিতিই করিমুল হকের মনকে নাড়া দেয়। তিনি ঠিক করেন, যদি শহর হাসপাতালে না পৌঁছতে পারে, তবে হাসপাতালই আসবে গ্রামের কাছে।

advertisement

View More

মানুষের সহযোগিতা ও নিজের সঞ্চয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি হাসপাতাল। যার জন্য প্রায় দুই কোটির বেশি টাকার খরচ হয়েছে। সেখানে রয়েছে কয়েকটি ওয়ার্ড, বেড, এবং বাইরে থেকে আসা চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা। তবে সেই হাসপাতাল এখনও পুরোপুরি কার্যকর নয়। নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি, নেই এক্স-রে, ইসিজি বা অপারেশন থিয়েটার। ফলে ডাক্তাররা এলেও শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। এই অবস্থায় এখন নিজেও শারীরিকভাবে অসুস্থ করিমুল হক। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে শরীর, নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। তবুও হাসপাতালের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন একাই।

advertisement

আরও পড়ুন : শিক্ষকের সবার SIR ডিউটি, BLO হয়ে ছুটতে হবে বাড়িতে বাড়িতে! ‘এই’ স্কুলে পড়াবে কে?

তিনি বলেন, মানুষ ভাবে পদ্মশ্রী পেলে অনেক টাকা পাওয়া যায়। আসলে আমি যা পেয়েছি, সব এই হাসপাতালেই ঢেলে দিয়েছি। এখন চাই সহৃদয় মানুষ এগিয়ে আসুন, এই হাসপাতালটাকে সম্পূর্ণ করতে সাহায্য করুন। শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসকরা নিয়মিত আসেন তাঁর আহ্বানে। তাঁদের সহযোগিতায় প্রতিদিন বহু মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। কিন্তু যন্ত্রপাতির অভাবে অনেককেই ফিরতে হয় খালি হাতে। এই আফসোসই আজ করিমুল হকের প্রেরণা।

advertisement

আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ভুবন বাদ্যকরকে মনে আছে? 'কাঁচা বাদাম'-খ্যাত গায়কের অট্টালিকায় কারা থাকে জানেন?
আরও দেখুন

তিনি বিশ্বাস করেন, ‘আমি একা কিছুই নই। মানুষ যদি পাশে থাকে, তাহলে এই হাসপাতালই একদিন হয়ে উঠবে ডুয়ার্সের প্রাণকেন্দ্র’। করিমুল হকের গল্প এক মানবিকতার জ্বলন্ত প্রতীক। বাইকের চাকায় ঘুরে শুরু হয়েছিল তাঁর সেবাযাত্রা, আজ সেই স্বপ্ন পৌঁছেছে হাসপাতালের দেয়াল গড়ার লড়াইয়ে। তাঁর দুই চাকার যানে শুরু হয়েছিল জীবন বাঁচানোর অভিযান, আর আজও সেই ইঞ্জিন থেমে যায়নি। চলছে মানুষের জন্য, মানুষের মধ্যেই। করিমুল হকের এই অদম্য ইচ্ছাশক্তিই প্রমাণ করে- অর্থ নয়, ইচ্ছে থাকলে মানবতা গড়ে তোলে ইতিহাস।

বাংলা খবর/ খবর/উত্তরবঙ্গ/
বাইক অ্যাম্বুল্যান্সে দাপিয়েছেন পাহাড়, এখন স্বপ্ন হাসপাতাল! দু'কোটি খরচেও অসম্পূর্ণ, লড়াই ছাড়েননি 'পদ্মশ্রী' করিমুল হক
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল