বাগান শ্রমিকদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামতেই চা বাগানের মাঝ দিয়ে যাওয়া রাস্তায় প্রায়ই ঘোরাফেরা করে লেপার্ড। ইতিমধ্যেই বন দফতরের পক্ষ থেকে চা বাগানে একটি বড় খাঁচা পাতা রয়েছে। তারপরও আতঙ্কমুক্ত নন শ্রমিকরা। সেই কারণেই জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগের উদ্যোগে সুন্দরবন থেকে আনা হল বিশেষ জাল। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের চারদিক ঘিরে যে জাল ব্যবহৃত হয়, যাতে বাঘ বাইরে বেরোতে না পারে, সেই একই পদ্ধতি এবার ডুয়ার্সে। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের পক্ষ থেকে কলাবাড়ি চা বাগানের হুলাস লাইন বস্তির সীমানা জুড়ে উঁচু করে সেই বিশেষ জাল লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: বর্ধমানে ডার্বির মহারণ, ট্রাইবেকারে দুরন্ত জয় মোহনবাগানের! জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়ে দিল প্রাক্তনরা
বনকর্তাদের মতে, জাল লাগানো হলে বস্তি এলাকায় লেপার্ড ঢুকতে পারবে না। একই আশা চা বাগান শ্রমিকদেরও। শ্রমিক বস্তির বাসিন্দাদের দাবি, কয়েকদিন আগেও ২টি গবাদি পশু মেরে ফেলেছে চিতাবাঘ। সন্ধ্যার পর রাস্তা দিয়ে চলাফেরা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই মানুষ ঘরবন্দি হয়ে যান আতঙ্কে। তাই বন দফতরের উদ্যোগে খুশি গ্রামবাসীরা। জানা গিয়েছে, জালটির উচ্চতা প্রায় ৯ ফুটেরও বেশি। বস্তির রাস্তার ধারে চা বাগানের সীমানা বরাবর জাল লাগিয়ে নিচে প্রায় দেড় ফুট মাটির মধ্যে গেঁড়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে কোনওভাবেই বেপার্ড বস্তির দিকে ঢুকতে না পারে।
বন দফতর জানিয়েছে, প্রতিটি চা বাগান শ্রমিক বস্তি সংলগ্ন এলাকায় ধাপে ধাপে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চা বাগানের বাসিন্দা মনোজ মাহাতো বলেন, এই শ্রমিক লাইনে লেপার্ডের হামলা সবথেকে বেশি। এখানে প্রচুর শিশু রয়েছে, তাই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। কিছুদিন আগে একটি শিশুকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছে লেপার্ড। কিন্তু বন বিভাগ যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে আমরা কিছুটা হলেও সুরক্ষিত মনে করছি। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের রেঞ্জার হিমাদ্রি দেবনাথ বলেন, ডুয়ার্সে বর্তমানে লেপার্ড-মানুষ সংঘাত হাতি মানুষ সংঘাতের মতোই বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণে সুন্দরবন থেকে বিশেষ জাল আনা হয়েছে। সুন্দরবনে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে সুফল মিলেছে। তাই আমরাও পরীক্ষামূলকভাবে জাল লাগানোর কাজ শুরু করেছি। আশা করছি এখানেও কাজে দেবে।
