নেওরাভ্যালি জাতীয় উদ্যানে বাঘের উপস্থিতি নিয়ে আর কোনও অনিশ্চয়তা রাখতে চাইছে না বন দফতর। ২০২২ সালের জাতীয় বাঘ শুমারিতে ট্র্যাপ ক্যামেরায় নির্ভরযোগ্য ছবি না পাওয়ায় সরকারি নথিতে বাঘের উপস্থিতির স্বীকৃতি পায়নি এই বনাঞ্চল। পরবর্তীতে একাধিক ক্যামেরা লাগানোর পর ২০২৪ সাল পর্যন্ত নেওড়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২৪টি বাঘের ছবি ধরা পড়ে। এই ছবি ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ায় পাঠানো হলেও সেই রিপোর্ট এখনও মেলেনি।
advertisement
সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই আসন্ন জাতীয় বাঘ শুমারির আগে জঙ্গলজুড়ে আধুনিক ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গরুমারা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও নেওরাভ্যালিতে আগের শুমারিতে নির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে বাঘের অস্তিত্ব নথিভুক্ত করা যায়নি। সেই সময় বাঘ শুমারি হয়েছিল ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির (এনটিএসএ) উদ্যোগে। তাই এ বছর কোমর বেঁধে বাঘ গণনায় নেমেছে গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগ।
চলতি মাসে অসমে বাঘ শুমারির প্রশিক্ষণ দিয়েছে এনটিএসএ। ২০২২ সালের বাঘ শুমারিতে বাঘের চিহ্ন না পেলেও স্থানীয় বনকর্মী ও গ্রামবাসীদের দাবি, মাঝেমধ্যেই বাঘের চলাচলের চিহ্ন চোখে পড়ে। বাঘের পায়ের ছাপ, মল এবং গাছের গায়ে নখের আঁচড়ের মতো একাধিক ইঙ্গিত মিলেছে বলেও জানিয়েছে বন দফতর। এবার সেই সম্ভাবনাকেই নির্ভুল তথ্যের মাধ্যমে প্রমাণ করতে উদ্যোগী প্রশাসন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কীভাবে হবে এই বাঘ শুমারি? বাঘের সম্ভাব্য করিডর, জলপথ, নালা, জঙ্গলঘেরা রাস্তার ধারে এবং ঘন জঙ্গলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে বসানো হচ্ছে উন্নতমানের ট্র্যাপ ক্যামেরা। এই ক্যামেরাগুলিতে নাইট ভিশন, মোশন সেন্সর ও হাই রেজোলিউশন সুবিধা থাকায় দিন-রাতের যে কোনও সময় বাঘ-সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর স্পষ্ট ছবি ধরা পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্যামেরা বসানো ও তথ্য সংগ্রহে কোনও ত্রুটি না থাকে, সে জন্য বনকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, “নেওরাভ্যালি উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল এবং একটি আন্তর্জাতিক করিডরের অংশ। এখানে বাঘের উপস্থিতি প্রমাণিত হলে সংরক্ষণ পরিকল্পনা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে। তাই এবার কোনও ঝুঁকি না নিয়ে নিখুঁত তথ্য সংগ্রহই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” বন বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঘ শুমারির আগে এই ক্যামেরা ট্র্যাপিং অভিযান নেওরাভ্যালির বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে নতুন দিশা দেখাতে পারে।





