পৌরাণিক মতে শ্রীকৃষ্ণের পৌত্র অনিরুদ্ধের সঙ্গে বাণরাজার কন্যা ঊষার এই স্থানে বিয়ে হয়। বাণগড়ে ঊষার বিয়ের এই ছায়ামণ্ডপটি আজও বর্তমান। মণ্ডপটির চার দিকে চারটি বড় পাথরের স্তম্ভ রয়েছে। স্থানীয় লোকেরা এদের ‘কলাগাছ’ বলেন। অনেক পর্যটক কলাগাছকে আলিঙ্গন করে তাঁদের মনের সুপ্ত বাসনাকে পূরণ করার জন্য প্রার্থনা জানান। এই পরিকাঠামোটি হল কলাগাছ যা দ্বৈত পাথরের স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।
advertisement
১৯৪২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই স্থান খনন করা হয়েছিল। পুরাতত্ত্ব বিভাগ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় অধ্যাপক কুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামী প্রথম বার বাণগড়ে খনন কাজ চালান। এরপর ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণ ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১০-এ খনন হয়। উঠে আসে অনেক অজানা ইতিহাস। সব শেষে ২০১১-এর প্রত্নখননে ক্যালকোলিথিক যুগের ইতিহাসও উঠে এসেছে, যা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। তাঁদের মতে, এটি গুপ্ত প্রজন্মের একটি কাঠামো। যা সেই সময়ের শিল্পকলার অন্যতম উদাহরণ।
আরও পড়ুন : এক চিলতে ভাড়ার ঘরে সোনার আলো! আন্তর্জাতিক যোগাসনে তিনটে সোনা হাওড়ার সুস্মিতার
২০১০-এ প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণ স্তম্ভগুলির কিছু অংশ খনন করে মাটির তলা থেকে মূল মন্দিরের কাঠামোটির অংশ আবিষ্কার করে। সেখানে মাটির তলা থেকে বেরিয়ে এসেছে পাথরের সিঁড়ি এবং চার দিকে ইটের ভাঙা স্থাপত্য। বর্তমানে জায়গাটির চার পাশে রয়েছে নানা অবৈধ নির্মাণ। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে বাণগড় খননের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
তবে এই নিদর্শন গুলোকে সুরক্ষিত না রাখতে পারলে বিজ্ঞানভিত্তিক খননের আগেই অনেক অজানা ইতিহাস হাতে হাতে পাচার হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা নানা মহলে। এই সমস্ত নিদর্শনের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অপরিসীম। কবে জেলার প্রত্নতত্ত্ব গুলি উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে, এখন জেলাবাসী সেই সোনালি দিনের আশায় দিন গুনছেন।