রাত তিনটা নাগাদ হঠাৎ করেই এলাকার একের পর এক বাড়িতে জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে বিছানা থেকে উঠে পড়েন মানুষজন। কেউ ছোট বাচ্চাকে কোলে তুলে নেন, কেউ বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে নিরাপদ জায়গা খোঁজেন। কিন্তু কোথাও আর নিরাপদ নয়। কারণ নদীর জল ক্রমে গিলে নিচ্ছে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ঘর।
advertisement
আরও পড়ুন : বাজনা, আলোয় ঝলমলে রাস্তাঘাট! চার বছরেই ‘সুপারহিট’ বারাসাত পুজো কার্নিভাল! ছবিতে দেখে নিন সেলিব্রেশন
সকাল সাড়ে চারটার দিকে ভেঙে যায় মহানন্দার একাংশের বাঁধ। তখন আর থামার উপায় নেই। চোখের সামনে বাড়িঘর, দোকান, মাঠ – সব জলে তলিয়ে যেতে থাকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র আধঘণ্টার মধ্যেই পোড়া ঝাড়ের বেশিরভাগ অংশ প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন : সুন্দরবনের লোকশিল্পীরা মাতিয়ে দিলেন পুজো কার্নিভাল! টাকি রোডে উৎসব দেখে মাতোয়ারা আট থেকে আশি
উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে ভোর থেকেই। প্রশাসনের তরফে মানুষজনকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্যার মূল বাধা জলস্রোতের তীব্রতা। অনেক জায়গায় জলের গভীরতা তিন থেকে চার ফুট ছুঁয়েছে। স্থানীয়দের একাংশ জানিয়েছেন, জলের তোড় এমন যে উদ্ধারকারী নৌকাও এগোতে পারছে না। রাতের আতঙ্ক এখনও কাটেনি।
আরও পড়ুন : কখনও পেটিকোট পরে ছুটছেন বাজারে, কখনও প্রতিবেশীর ঘরে হামলা! পুলিশকর্মীর কাজে হতভম্ব সবাই
এই ঘটনায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, বর্ষা এলেই একই ছবি দেখা যায়। প্রতি বছর মহানন্দার জল গিলে খায় পোড়া ঝাড়, অথচ স্থায়ী সমাধান হয় না। এদিকে প্লাবিত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার স্বার্থে। সকাল থেকে চলছে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম। জেলা প্রশাসনের দল এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
রাতের সেই ভয়াবহ সময় এখনও চোখে লেগে আছে বাসিন্দাদের। কারও ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়েছে, কারও আবার বছরের পরিশ্রমের ফসল জলের নিচে। মহানন্দার এই হঠাৎ তাণ্ডব যেন আরেকবার মনে করিয়ে দিল, প্রকৃতির সামনে মানুষ কতটা অসহায়।