অভিযোগ, টাকার অভাবে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে মৃত শিশুকে ব্যাগে করে শিলিগুড়ি থেকে কালিয়াগঞ্জে নিয়ে আসেন অসহায় বাবা। এমনকি ১০২ নম্বরে ফোন করেও বিনামূল্যের পরিষেবা মেলেনি। চিকিৎসা ও মেডিকেল সুপারকে আর্জি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এইরকম পরিস্থিতিতে নিজের মৃত সন্তানকে ব্যাগে ভরে নিয়ে বাড়ি ফেরেন বাবা অসীম দেবশর্মা। ঘটনা জানাজানি হতেই জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ঘণ্টাখানেই ধেয়ে আসছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি, বীরভূমে সতর্কতা জারি
সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মুস্তাফানগর গ্রামপঞ্চায়েতের ডাঙ্গিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মার স্ত্রী যমজ সন্তানের জন্ম দেন। পাঁচ মাস পর দুই শিশুই অসুস্থ হয়ে পড়ে। গত রবিবার তাদের দু’জনকেই কালিয়াগঞ্জ ষ্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। শেষমেশ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় দুই শিশুকে। এরপর গত বৃহস্পতিবার এক শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন অসীম দেবশর্মার স্ত্রী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে অন্যজনের মৃত্যু হয়।
অসীম পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। অর্থের অভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে পারেননি। এরপর রবিবার ভোরে মৃত ছেলের মৃতদেহ একটি ব্যাগে ভরে বেসরকারি বাসে করে রায়গঞ্জ পৌঁছন। সেখান থেকে অন্য একটি বাসে চেপে কালিয়াগঞ্জে পৌঁছন। অসীম জানিয়েছেন, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে ৮ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এমনিতেই চিকিৎসা বাবদ অনেকটা খরচ হয়ে গিয়েছে, প্রায় সর্বস্বান্ত অবস্থা। এরপর আর সন্তানের দেহ এত টাকা খরচ করে আনার মতো সামর্থ্য ছিল না হতভাগ্য বাবার। তাই একটি কাঁধ ব্যাগে ছেলের দেহ ভরে নিয়ে বাসে উঠে পড়েন।
আরও পড়ুনঃ হঠাৎ আবহাওয়ার ব্যাপক বদল! আজই কিছুক্ষণের মধ্যে জেলায় জেলায় কাঁপিয়ে বৃষ্টি, জানুন সর্বশেষ পূর্বাভাস
অসীম দেবশর্মা বলেন, “যেই অফিসে গাড়ির জন্য লেখালেখি করে সেখানে বললাম কালিয়াগঞ্জ যাব। জানতে চাইল রোগী কে? বললাম রোগী না, মারা গিয়েছে। শুনে বলল দেহ নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই। তাই টাকা লাগবে। বলল ৮ হাজার টাকা লাগবে। দু’জনকে বললামও। শিলিগুড়ি থেকে তাই বাসে উঠে পড়লাম। রায়গঞ্জে নেমে আবার বদলালাম বাস। কাউকে জানাইনি কী আছে। কালিয়াগঞ্জে বিবেকানন্দ মোড়ে নামার পর গৌরাঙ্গ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেন। তাতেই বাড়ি ফিরি।”
গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “এটা খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। ঘটনার খবর পেয়েই কোনও মানবিকতার খাতিরে অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। অন্তত বাড়ি পর্যন্ত যাতে মৃত শিশুটিকে নিয়ে যেতে পারেন শিশুটির অসহায় বাবা।”
পিয়া গুপ্তা






