আরও পড়ুন: টেলি কার্ডিওলজি’র মাধ্যমে চার রোগীকে সারিয়ে তুলল বারুইপুর হাসপাতাল
তিস্তা পাড়ে বন্যপ্রাণ, বিশেষত হাতি-মানুষের সংঘাত আজ যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। বিগত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই সময়ে বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে বেরিয়ে আসছে হাতির পাল। এই হাতির পালের মূল অবস্থান তিস্তা নদীর মাঝে কিংবা আশপাশের গ্রামের সঙ্গে লাগোয়া জঙ্গলে। আর এর থেকেই পরিবেশ কর্মীদের মনে জেগেছে প্রশ্ন। আগে হাতির পাল নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পথ ধরে জঙ্গল ছেড়ে বেড়িয়ে আবারও ফিরে যেত জঞ্জলে। তবে গত কয়েক বছর ধরে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না।
advertisement
হাতির আচরণের এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে পরিবেশপ্রেমী সংগঠণগুলো মনে করছে, অতীতে হাতি শীতকালে খাদ্যের সন্ধানে নিজ পথ ধরে উত্তরবঙ্গ থেকে সুদূর গাড়োয়াল পর্যন্ত চলে যেত এবং নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে আসত। এখন সেখানে হাতি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে জল পান করছে। তিস্তার পাড়ে যেসব কৃষকরা ফসল চাষ করেন তাঁদের উপর এবং ফসলের ওপরে যখন তখন আক্রমণ করছে। কৃষক নিজের ফসল বাঁচাতে গিয়েই হাতির সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে বারংবার। আর এতেই বাড়ছে মৃত্যুর ঘটনা। প্রসঙ্গত, একটা সময় তিস্তা নদীর দু’পাশে ছিল গরুমারা, বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল এবং হাতি চলাচলের পথ বা করিডর। সেসব স্থানে চাষাবাদ হত না।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
শীতকালে বনাঞ্চলের ভেতরে যেসব ছোট ছোট ঝোরা রয়েছে সেগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় হাতির দল সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীরা তিস্তা অথবা পার্শ্ববর্তী নদীতে জল পান করতে চলে যেত। কিন্তু এই জল পান করতে গিয়ে উপরি পাওনা হিসেবে বর্তমানে পেয়ে যাচ্ছে ফসল। এর সঙ্গে গভীর জঙ্গলে থাকা প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোর দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না করায় তাদের পানীয় জলের অভাব ঘটছে। বিশেষত গরুমারা জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা রিসোর্টগুলি জঙ্গলে জলের গতিপথ আটকে দেওয়ায় শুকিয়ে যাচ্ছে জলাধার। ফলে তৃষ্ণা মেটানোর তাগিদেই আজ হাতি সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী তিস্তা নদী সহ লোকালয় মুখী হচ্ছে। এতেই বাড়ছে মানুষ এবং বন্য প্রাণের নিত্য সংঘাত।
সুরজিৎ দে