প্রতিবছর সামাজিক বার্তা নিয়ে আলাদা আয়োজন করে রবীন্দ্র সংঘ। কখনও বৃদ্ধাশ্রম, কখনও শিশুশ্রমের মতো জ্বলন্ত ইস্যুতে থিম তৈরি হয়েছে। কিন্তু এবারের থিমটি একেবারেই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো- “নীরব নায়ক বাবা”। দেবীপক্ষের মাতৃ আরাধনার মাঝেই দর্শনার্থীরা মণ্ডপে ঢুকে অনুভব করবেন বাবাদের অদৃশ্য সংগ্রাম ও নিঃশব্দ ভালোবাসার কাহিনী।
আরও পড়ুনঃ রোজ রাস্তা পরিষ্কার করলেও এক পয়সা নেন না! কিন্তু কেন? এই বৃদ্ধের কাহিনী জানলে স্যালুট করবেন
advertisement
প্রতিমা ও মণ্ডপসজ্জার শিল্পীদের হাত ধরে ফুটে উঠবে বাবাদের জীবনের নানা অধ্যায়। কোথাও দেখা যাবে বাবার ঘাম ঝরানো শ্রমে গড়ে ওঠা সংসার, কোথাও দেখা যাবে সন্তানের হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে হাঁটার দৃশ্য। কোনও শিল্পকর্মে বাবাকে দেখা যাবে কঠোর মুখে সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে, আবার কোথাও তাঁর চোখে ধরা পড়বে অগাধ মমতা- যা কথায় প্রকাশ না হলেও অনুভূত হয় প্রতিদিন।
সংসারের প্রতিটি প্রয়োজন মেটাতে বাবারা ভুলে যান নিজের শখ, নিজের ইচ্ছা। পরিবারের জন্য তিলে তিলে গড়ে তোলা সঞ্চয়ের স্তর, সন্তানের পড়াশোনার খরচ থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি চাহিদা পূরণের সংগ্রাম- সবই নিঃশব্দে চলতে থাকে। এই আত্মত্যাগকে দৃশ্যমান রূপ দেবে রবীন্দ্র সংঘের ৭৩তম বর্ষের পুজো।
আরও পড়ুনঃ শহরজুড়ে ডাস্টবিন থাকলেও রাস্তায় আবর্জনা! কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি ‘এই’ পুরসভার, হয়ে যান সাবধান!
রবীন্দ্র সংঘের মুখপাত্র শুভ্র মণ্ডল বলেন, “আমরা সবাই মায়েদের অবদানের কথা বলি, তাঁদের সংগ্রামকে স্বীকৃতি দিই। কিন্তু বাবাদের অবদানটা যেন আড়ালেই থেকে যায়। তাঁদের কঠোর চেহারার আড়ালে যে ভালোবাসা আর ত্যাগ লুকিয়ে থাকে, সেটাই আমরা এবারের থিমে তুলে ধরতে চাই। বাবাদের প্রতি এটা আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।”
এবারের মণ্ডপে ঢুকলেই শুধু দেবী দুর্গার আরাধনা নয়, দর্শনার্থীরা অনুভব করবেন জীবনের প্রথম হিরো বাবার সংগ্রাম ও স্নেহের গল্প। যারা নিজেদের ইচ্ছা দূরে সরিয়ে প্রতিদিন সন্তানের স্বপ্ন পূরণের জন্য লড়াই করে চলেন, তাঁদের জীবনের সিম্ফনি এক অদৃশ্য সুরের মতো শিল্পকর্মে বেজে উঠবে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সমাজের চোখে দৃশ্যমান মায়েদের সংগ্রামের মতো বাবাদের লড়াই যদিও আড়ালে থেকে যায়, তবে এই বছর রবীন্দ্র সংঘের ভাবনায় তা আলোয় আসবে। দর্শনার্থীরা হয়তো মনে মনে খুঁজে নেবেন নিজেদের বাবাকে- হয়তো চোখের কোনে চিকচিক করবে নামহীন তৃপ্তি, বাবার নীরব ভালোবাসার স্বীকৃতি হিসেবে।