মৃতের মা ইতিয়া বেওয়া বলেন, “আমাদের অভাবি সংসার। দেড় বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছে। আমি অসুস্থ কোন কাজ করতে পারি না। আমার ছেলে প্রথম রোজগারের জন্য ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজে গিয়েছিল। শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালানো থেকে আমার চিকিৎসা, বোনের বিয়ের কথা চিন্তা ভাবনা শুরু করেছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল। আমার পরিবারে কাজ করার কেউ রইল না।”
advertisement
আরও পড়ুন ঃ উচ্চমাধ্যমিকে ৪১০, স্বপ্নপূরণে মিজোরামে কাজে গিয়েই মৃত্যু মালদহের সাহিনের
মিজোরামে নির্মীয়মান রেল ব্রিজ ভাঙায় ক্ষতিগ্রস্ত মালদহ। মালদহের বিভিন্ন প্রান্তের পরিযায়ী শ্রমিকেরা এই দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে রতুয়ার কোকলামারি গ্রামের মনিরুল নাদাপ। গত প্রায় দেড় বছর আগে মনিরুলের বাবা মারা গিয়েছেন। বাবাও শ্রমিকের কাজ করে কোনক্রমে সংসার চালাতেন। বসত ভিটে পর্যন্ত নেই পরিবারের। সরকারি খাস জমির উপর চাটাইয়ের বাড়িতে বসবাস।
বাবার মৃত্যুর পর সংসারের ভার এসে পড়ে বছর আঠারোর মনিরুলের উপর। দুস্থ পরিবার তার উপর অসুস্থ মা এই নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে মনিরুল। অবশেষে প্রতিবেশিরা তাঁকে শ্রমিকের কাজে নিয়ে যায়। প্রতিবেশি ফাজুলু নাদাপ বলেন, পরিবারটি খুব দুস্থ। বসবাস করার ভিটে পর্যন্ত নেই, সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে কুঁড়ে ঘরে। ছেলেটির বাবাও মারা গিয়েছে। পাড়া প্রতিবেশীরাই তাকে এবার প্রথম কাজে নিয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন ঃ মিজোরামের ব্রিজ ভেঙে মালদহের ২৪ জন শ্রমিক মৃত! নিখোঁজ ১০ জন! হাহাকার
দেড় মাস আগে পাড়ার পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে মিজোরামে পাড়ি দিয়েছিল। শ্রমিকের কাজ করে সংসার সামলে মায়ের চিকিৎসা থেকে বোনের বিয়ের চিন্তা ভাবনা ছিল। বর্তমানে বোন সারেফা খাতুন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। এখন থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে বোনের বিয়ের চিন্তা ভাবনা শুরু করেছিল। অনেক স্বপ্ন নিয়েই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু চিন্তা ভাবনা বাস্তব হওয়ার আগেই সব শেষ। বর্তমানে পরিবারে রোজগারের কেউ রইল না। কি করে মা মেয়ের পেট চলবে এই চিন্তায় এখন মা ইতিয়া বেওয়ার মনে।
হরষিত সিংহ