বিধানসভায় শোভনদেবের বিরুদ্ধে গোর্খা সহ পাহাড়ের আদিবাসীদের ' বহিরাগত' বলার অভিযোগকে হাতিয়ার করে পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে খুঁচিয়ে তুলেছিল বিনয় তামাং সহ বিরোধীরা। এই ইস্যুতেই আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারী পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বনধেরও ডাক দিয়েছে তারা। কিন্তু, হিসেবের গরমিলে আদিবাসী তাস খেলা বিজেপি এই বনধকে সমর্থন করতে পারল না।
advertisement
আরও পড়ুন: 'বঙ্গ ভঙ্গ করতে দেবো না', শিলিগুড়ি পৌঁছেই চ্যালেঞ্জ মমতার! বনধ নিয়েও হুঁশিয়ারি
বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের উপর আলোচনায় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, দাজিলিংয়ের গোর্খাদের বহিরাগত বলে মন্তব্য করেছেন। শোভনদেবের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদিবাসী তাস খেলতে শুরু করে বিজেপি। গতকাল বিধানসভায় শোভনদেবের মন্তব্যকে গোর্খা সহ আদিবাসীদের অপমান বলে দাবি করে প্রতিবাদ করে বিজেপি।
বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা ও কার্শিয়ংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, গোর্খা ও আদিবাসীদের অপমান করার জন্য শোভনদেবকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ইতিহাসের নামে গোর্খা ও আদিবাসীদের অসম্মান করার জন্য শোভনদেবের পদত্যাগও দাবি করে তারা।
এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড়ে পৌঁছনোর দিনেই শোভনদেবের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করতে বিজেপি যখন মরিয়া, ঠিক তখনই এই ইস্যুতেই আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকে বসলেন বিনয় তামাং, এডওয়ার্ড সহ বিরোধীরা। মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের জিটিএ দফতরের সামনে প্রস্তাবিত বনধের ঘোষণা করতে গিয়ে বিনয় তামাং বলেন, 'বিধানসভায় রাজ্য সরকার গোর্খাদের বহিরাগত বলেছে। রাজ্য সরকারই চায় না আমরা বাংলার সঙ্গে থাকি। তাই আমরা পাহাড়ের মানুষের কাছে আবদেন করেছি, যারা গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করবেন তারা ওই দিন বাড়িতে থাকুন। আর, যারা বিরোধিতা করবেন তারা রাস্তায় বেরোন।'
আরও পড়ুন: বিজেপি বাংলা ভাগ চায় না, শিলিগুড়িতে বললেন দিলীপ ঘোষ, পালটা বিজেপিকে খোঁচা গৌতম দেবের
বিনয় তামাংদের বনধের ঘোষণা হওয়া মাত্রই তার তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ জানিয়ে দেন, গোর্খাল্যান্ড সহ রাজনৈতিক ইস্যুতে আন্দোলন নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি না থাকলেও, কোন ভাবেই বনধ করা যাবে না। মাধ্যমিক শুরুর দিনেই বনধ ডাকায় পাহাড়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বনধ প্রত্যাহার করার জন্য বার্তা পাঠান বিনয় তামাং দের। বিধানসভায় এই ঘটনায় বিজেপি বিধায়করাও নড়েচড়ে বসেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দেন, বিজেপি এই বনধ সমর্থন করে না৷
রাজনৈতিক মহলের মতে, জিটিএ-র বিরোধিতা করে, গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলতে আদিবাসী ও গোর্খা ইস্যুকে হাতিয়ার করেছিলেন বিনয় তামাংরা। ২৪-এর লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে বিনয় তামাংদের পিছন থেকে মদত দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, সেই ইস্যুতে বিনয় তামাংদের ডাকা,বনধকে সমর্থন করলে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে রাজ্যভাগের চেষ্টার জন্য বিজেপির ঘাড়েই দোষ চাপাতো তৃণমূল। সে কারণেই আপাতত বিনয় সহ পাহাড়ের বিরোধীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখল বিজেপি।