আলিপুরদুয়ার জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ৮৪ বছরের প্রবীণ নাগরিক খগেন্দ্ৰনাথ নাথ রায়। আলিপুরদুয়ার ১ নং ব্লকের চকোয়াখেতি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুমারপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। বাড়িতে টিভি থাকলেও তা একদমই অপছন্দ তাঁর। আছে সেই পুরনো আমলের রেডিও, সারা দিন ও রাতের সঙ্গী বলতে একটাই। আধুনিকতার যুগে মোবাইল ফোন তো দূরে থাক, দাদু ঠাকুমাদের আমলের সেই পুরনো রেডিও হাতে নিয়েই সারা দিন ঘুরে বেড়ান তিনি গ্রামের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে। একেবারে নির্দিষ্ট সময় ধরে শোনেন দেশের, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের খবর। বিনোদনের জন্য শোনেন তিনি পুরনো দিনের সিনেমার গান, উত্তরবঙ্গের মাটির গান, পল্লীগীতি-সহ আরও অনেক অনুষ্ঠান।
advertisement
আরও পড়ুন : দুপুরের তীব্র গরমে পথচলতি মানুষের দিকে পুলিশের মানবিক হাত এগিয়ে দিল জলের বোতল
আধুনিকতার চরম আস্ফালন থেকে দুরে রেখেছেন নিজেকে। অতীতকে নিয়েই বেঁচে থাকতে চান তিনি। সংসারের হাল টানতে কৃষিকাজের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন দীর্ঘ জীবন। মানুষ করেছেন সন্তানদের। বর্তমানে দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে এস.এস.বি তে কর্মরত, ছোটো ছেলের ব্যবসা । অবসর সময়ে তাই দিন যাপনের জন্য একমাত্র পন্থা হিসেবে রেডিও এখন নিত্যদিনের সঙ্গী এই ৮৪ বছরের বৃদ্ধের। আগেরকার দিনের নানা অনুষ্ঠান, বিনোদন, খেলার বিবরণী ছাড়াও আবহাওয়া, রাজনৈতিক, কৃষিকাজ-সহ বিভিন্ন ধরনের খবরাখবর শোনার একমাত্র মাধ্যম ছিল এই রেডিও।
আরও পড়ুন : অতীতের তিরস্কারই আজকের পুরস্কার, শিস দিয়ে গান গেয়ে ভাইরাল ফুলিয়ার ব্যবসায়ী
রেডিওর প্রচলন শুরু হওয়ার পর প্রায় ঘরে ঘরে জায়গা করে নেয় ট্রানজিস্টার। কিন্তু আধুনিক যুগে মোবাইল, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের কারণে রেডিও এখন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। বর্তমানে স্মার্টফোনের যুগে রেডিওর জনপ্রিয়তা সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো কেউ রেডিও শোনেন না। হারিয়ে যাওয়া রেডিও আগামী প্রজন্মের কাছে এবার শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে, এমনকি স্থান হতে পারে জাদুঘরেও! কালের ইতিহাসে এক স্বপ্নময় অধ্যায় হয়ে রয়ে যাবে আপামর বাঙালির আবেগ রেডিও।
( প্রতিবেদন : দীপেন্দ্র লাহিড়ী)