বয়সের ভারে বেশ অনেকটাই অসুস্থ ওই বৃদ্ধা। তবে মানসিক জোরে আজও স্বামীর স্মৃতিকে আগলে থেকে গেছেন পঞ্চাশ বছরেরও পুরনো সেই বাড়িতে। আজও স্বামীর আজাদ হিন্দ ফৌজ এর পোশাকের ছবি দেখলে চোখের কোনায় জল চলে আসে রেনুকা দেবীর। তবে এখনো মানসিক জোর দেখলে রীতিমতো তাজ্জব বনে যেতে হয়। তিনি জানালেন, এই মানসিক জোর তার স্বামীর থেকেই প্রাপ্ত। কোন কিছুতেই মাথানত করতেন না স্বামী হিমাংশু বিমল দত্ত। সে সময়ে প্রায় বেশ কয়েকটি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবার একত্রিত হয়ে এই এলাকায় বসতি স্থাপন করেছিলেন। স্বামীর উদ্যোগে বেশ কয়েকজন নেতাজি প্রেমী মানুষদের নিয়েই এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছিল নেতাজি ক্লাব।
advertisement
নেতাজি কে ভালবেসে আজও কাঁপা কাঁপা হাতে পতাকা উত্তোলন করেন বৃদ্ধা রেনুকা দত্ত। তিন ছেলে তিন মেয়ে থাকলেও, বর্তমানে রেনুকা দেবী ছোট ছেলের কাছেই থাকেন। স্বামীর মুখ থেকে স্বাধীনতার ইতিহাসের কিছু গল্প শুনলেও, আজাদ হিন্দ ফৌজ এর শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে গোপন ইতিহাস কখনোই তার শোনা হয়নি স্বামীর কাছ থেকে। বৃদ্ধা রেনুকা দেবীও চান পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখুক এই ইতিহাস। স্বাধীনতার যুদ্ধের গল্পের কথা জানলেও, আজাদ হিন্দ ফৌজ এর কর্মীদের কাজ নিয়ে এখনো রয়ে গেছে নানা অজানা কাহিনী। প্রতিবেশী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারের অপর এক বৃদ্ধা বেলা গুহ জানালেন, নেতাজিকে চাক্ষুষ দেখার অভিজ্ঞতা।
পাশাপাশি তিনি এও জানান, স্বাধীনতা সংগ্রামী হিমাংশু বিমল দত্ত পরলোক গমনের পর থেকে রেনুকা দেবী স্বামীর সেই পুরনো স্মৃতি আঁকড়ে রয়ে গেছেন ভাঙাচোরা এই পুরনো বাড়িতেই। মাঝেমধ্যে পুরনো দিনের কথা নিয়েও স্মৃতিচারণা হয় তাদের মধ্যে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের স্মৃতি নিয়ে আজও এভাবেই বেঁচে আছেন আজাদ হিন্দ ফৌজ এ নেতাজির দেখানো পথে হাটা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবার। কালের নিয়মে সব ইতিহাসই একদিন চাপা পড়ে যায়, কিন্তু এহেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারের সদস্যরা চান বেঁচে থাকুক স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, বেঁচে থাকুক নেতাজি। নেতাজির আদর্শকে পাথেয় করেই এখনো দিন গুজরান করছেন এহেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারের সদস্যরা।






