হিঙ্গলগঞ্জের উত্তর বাকড়া গ্রামে বাড়ি মিয়ারাজ গাজির। মাস তিনেক আগে এই নাবালকের পেটে একটি টিউমার ধরা পড়ে। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বসিরহাটে চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি কয়েকটি পরীক্ষা করার কথা বলেন। সেই সমস্ত মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট দেখে গোটা পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। জানা যায় মিয়ারাজ গাজির টিউমারটি ম্যালিগন্যান্ট, সে ক্যান্সারে আক্রান্ত।
advertisement
পঞ্চম শ্রেণির এই ছাত্রের বাবা মোশারফ গাজি পেশা সামান্য ভ্যান চালক, মা নাজমা বিবি গৃহবধূ। সেই সঙ্গে তাঁদের আরেকটি কন্যা সন্তান আছে। এমন একটি পরিবারের পক্ষে সন্তানের ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ বহন করা অসম্ভব। যথারীতি মিয়ারাজের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খায় পরিবার। এদিকে এখানকার ডাক্তারবাবুরা বলেন, ভেলোরে গিয়ে চিকিৎসা করতে। না হলে মিয়ারাজকে বাঁচানো যাবে না! এরপর কোন মা-বাবা আর চুপ করে বসে থাকতে পারে। তারা ছেলেকে ভেলোরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাবেন বলে ঠিক করেন। সেই সময় তাঁদের বলা হয় মিয়ারাজের চিকিৎসার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে। পরবর্তীতে সেই খরচ আরও বাড়তে পারে বলে জানান ভেলোরের চিকিৎসকরা। এর ওর থেকে চেয়ে চিনতে ৮ লাখ টাকা যোগাড় ছেলেকে নিয়ে ভেলোরে যায় মিয়ারাজের পরিবার।
আরও পড়ুন: কনটেম্পোরারি দর্শন নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের কলেজে আন্তর্জাতিক সেমিনার
কিন্তু তাদের অভিযোগ, মোটা টাকা খরচ করলেও ভেলোরে এই নাবালকের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা হয়নি। দিনে দিনে সে আরও দুর্বল হয়ে পড়ছিল। এরপরই তাঁরা রাজ্যে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। কলকাতায় ফিরে সোজা চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় মিয়ারাজ গাজিকে। সেখানেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিনা খরচে ক্যান্সার চিকিৎসার মূল বিষয় কেমো দেওয়া হয় ওই ছাত্রকে।
ইতিমধ্যেই মিয়ারাজকে চারটি কেমো দেওয়া হয়েছে। আগামীতে তাকে আরও কয়েকটি কেমো দিতে হবে। হাসপাতাল থেকে মিয়ারাজ এখন বাড়ি ফিরে এসেছে। আগের তুলনায় তার শারীরিক অবস্থার বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গ্রামবাসীদের কাছে ক্যান্সার আক্রান্ত ছাত্রের কথা শুনে হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল জানান, মিয়ারাজের চিকিৎসার যাবতীয় খরচের বন্দোবস্ত তিনি করবেন। যাতে সে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে আবার ফের ফিরে আসতে পারে। এই বিষয়ে কলকাতায় চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলেও জানান বিধায়ক।
জুলফিকার মোল্লা