অশোকনগর তিন নম্বর শ্মশান এলাকার পেট্রোল পাম্পের পাশেই সুভাষ বাবুর চায়ের দোকান। বয়সও বেশ অনেকটাই গড়িয়েছে। বার্ধক্যর কারণে এখন অল্পতেই হাঁপিয়ে যান তিনি। তবু শখ পূরণে এখনও কঠোর পরিশ্রম করেন এই চা বিক্রেতা। কয়েক বছর হল সুভাষ বাবুর দোকানের সামনের রাস্তাটি সংস্কার হয়েছে। দুই লেনের রাস্তার মাঝে বসেছে ডিভাইডার। তবে, ইচ্ছা থাকলেই যে উপায় হয় তা এবার প্রমাণ করে দিলেন প্রকৃতিপ্রেমী সুভাষ সরকার।
advertisement
অশোকনগরের মানুষের কাছে ইতিমধ্যেই তার কর্মকাণ্ড প্রশংসা পেতে শুরু করেছে। নিজের থেকে টাকা খরচ করেই, ডিভাইডারে বসিয়েছেন বিভিন্ন রকমের বাহারি ফুলের গাছ। শীতের মরসুম পড়তেই ফুল ধরেছে গাছে, যা দেখে একপ্রকার নয়নসুখ পাচ্ছেন এই দরিদ্র চা বিক্রেতা। দিনে খুব বেশি আয় নেই তার, তবে ইতিমধ্যেই বাহারী ফুলের শখে বেশকিছু টাকা খরচ করেছেন তিনি। এখন চাইছেন যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি বা সংস্থা এগিয়ে এসে তাকে সাহায্য করে তবে আরও বাহারী গাছ রোপন করে সৌন্দর্যায়নের ব্রতী হতে পারেন এই দরিদ্র চাওয়ালা।
দুই রাস্তার মাঝে, বাহারী ফুলের গাছ দেখে সকাল সন্ধ্যে রাস্তায় চলাচলকারী মানুষদের প্রশংসা করছেন এই চা বিক্রেতাকে। মোরগ ফুল থেকে শুরু করে, বিভিন্ন রকমের সোনালী কালারের ফুল গাছ লাগিয়েছেন ডিভাইডারের মাঝখানে। বয়সের কারণে খুব বেশি সময় না দিতে পারলেও, সকাল-বিকেল একবার হলেও গাছের পরিচর্যা করেন সুভাষ বাবু। বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে, বৌমা এবং নাতিদের নিয়ে তার পরিবার। সামান্য টিনের ছাউনিতেই একটি চায়ের দোকান করেই সংসার চালাচ্ছেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার ছেলেই এখন সামলাচ্ছেন সেই দোকান।
করোনার কারণে দীর্ঘ সময় দোকান বন্ধ থাকায় সংসারে এসেছে অনটন, তবুও থেমে থাকেননি। বহু কষ্ট করে ধীরে ধীরে পুরো পরিবারকে সামলেছেন। ছোটবেলা থেকেই গাছের খুব শখ। কিন্তু সামান্য টিনের ছাউনির বাড়িতে জায়গার অভাবে, তা আর পূরণ হয়নি। তাই রাস্তার ডিভাইডারের মাঝখানে নিজের শখে প্রায় তিন হাজার টাকার গাছ লাগিয়েছেন সুভাষ বাবু। আগামী দিনেও এমন কোথাও জায়গা পেলে, আবারও নিজের শখেই গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করতে চান তিনি।