সেখানে বাদ যায়নি শিশুরাও। কারণ আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকায় চকচকে শপিংমলে প্রবেশের তেমন সুযোগ থাকে না তাদের। ফলে মনের স্বাদ জাগলেও তা পূরণ হয়না কখনওই। আর দশ জন মানুষের মতো কালারফুল সাজ পোশাকের থেকে অনেকটাই দূরে থেকে যায় তারা। তাই এ হেন মানুষদের জন্য বিনা পয়সার শপিং মল করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিল ‘ইচ্ছে’। এদিনের বিনা পয়সার শপিংমলে এসে নিজেদের পছন্দের জিনিস নিলেন প্রায় ২০০ জন মানুষ।
advertisement
প্রসঙ্গত, বিদেশে বসবাস করলেও, দেশের টানে বারংবার মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ নিয়ে ছুটে আসেন তারা। সোমা মজুমদার দে ও তাঁর স্বামী অমরেশ মজুমদার কর্মসূত্রে বাইরে থাকলেও, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে দেশেই আটকে পড়েন। সেই সময় নিজেদের সঞ্চিত অর্থে প্রায় পঞ্চাশ দিন দুস্থ মানুষদের সাহায্যে বাড়িয়ে দেন হাত। আর সেই সময়ে দেখা মানুষের কষ্ট রীতিমত নাড়িয়ে দেয় এই প্রবাসী দম্পতিকে।
আরও পড়ুন: সীমান্তের কাঁটাতার বেঁধেছে জীবন! পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ জয়ন্তীপুরে
ইচ্ছে থাকলেও যে উপায় হয় তা আরও একবার প্রমাণ করেন বিরাটির এই বাসিন্দারা। আর তারপর থেকেই নানা ভাবে মানুষের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে প্রতি বছর ইচ্ছের তাগিদে পিছিয়ে পড়া দুস্থ মানুষ ও শিশুদের সাময়িক আনন্দ দিতে পাশাপাশি তাদের পাশে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকেন। তার মধ্যে যেমন থাকে রক্তদান তেমনি পরিবেশ সচেতনতার বার্তা নিয়ে করা হয় বৃক্ষরোপণও।
তবে এদিন বিদেশ থেকে নিয়ে আসা বিভিন্ন জামা কাপড় পোশাক নিয়ে এই দুস্থ মানুষদের জন্যই ইচ্ছের পক্ষ থেকে করা হল বিনে পয়সার শপিং মল। আলো ঝলমলে দ্বিজকাননে, সারি সারি সাজিয়ে রাখা ছিল নামিদামী ব্র্যান্ডের পোশাক। মহিলা থেকে শিশু সকলের জন্যই ছিল এই সুবিধা। নিজেরা নিজেদের পছন্দ মতন পোশাক বেছে নিলেন রেলপারের বস্তি এলাকার মানুষজন। শিশুরা পোশাকের পাশাপাশি খেলনা বই খাতা ও নিয়ে গেলেন ইচ্ছের কাছ থেকে। আর তাতেই যেন পরিতৃপ্তি লাভ করল ইচ্ছের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: যে কোনও সময় হতে পারে বড়সড় বিপদ! প্রাণের ঝুঁকি হাতে নিয়েই চলছে পারাপার
শুধু তাই নয়, সোমাদেবী ও অমরেশবাবুর মেয়েরাও ছোট বয়স থেকেই মানব সেবার শিক্ষা পেয়ে আসছেন। বিদেশে থাকলেও দেশের মানুষদের প্রতি তাদেরও তৈরি হয়েছে অগাধ ভালবাসা। মেয়ে আয়ুষী ও আরোহী তাই ছোট থেকেই মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে বেশি খুশি হয়।
এদিন অসহায় দুস্থ এহেন বাচ্চাদের প্রযুক্তি বিদ্যায় আগ্রহী করে তুলতে খেলার ছলেই বিশেষ কর্মশালা করতে দেখা গেল বিদেশে পাঠরতা ইচ্ছের ছোট্ট সদস্য আয়ুষীকে। এদিন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এলাকার বিশিষ্ট মানুষদেরও উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে এই বিনে পয়সার শপিংমলে। অভিনব এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সমাজের বিভিন্ন মহলও।
Rudra Narayan Roy