পুরাণ অনুযায়ী মহাদেবের সঙ্গে নীলাবতীর বিয়ে হয়েছিল। দক্ষযজ্ঞে দেহত্যাগের পর শিবজায়া সতী নতুন করে জন্মগ্রহণ করেন নীলধ্বজ রাজার ঘরে। রাজা তাঁকে লালন পালন করেন। তারপর সুন্দরী কন্যার বিয়ে দেন শিবের সঙ্গে। নীলাবতী শিবকে মোহিত করে পরে মক্ষিপা রূপ ধরে ফুলের সঙ্গে জলে নিক্ষিপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। রাজা-রাণীও শোকে প্রাণবিসর্জন দেন। শিব ও নীলাবতীরই বিবাহ-অনুষ্ঠানের লৌকিক স্মৃতিচিহ্ন বহন করে এই নীলপুজো।
advertisement
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে এই পুজো। সাথে নীল সন্ন্যাসী ও শিব-দুর্গার সঙেরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে করেন ভিক্ষা সংগ্রহ। নীলের বিশেষ গানকে বলা হয়ে থাকে অষ্টক। সন্ধ্যাবেলায় সন্তানবতী মহিলারা সন্তানের কল্যাণার্থে প্রদীপ জ্বালিয়ে শিবপুজো করে সারাদিনের উপবাস ভঙ্গ করে থাকেন। বহু জায়গায় নিম বা বেল কাঠ দিয়ে নীলের মূর্তি তৈরি হয়। পুজোর সময় নীলকে গঙ্গাজলে স্নান করিয়ে নতুন লাল কাপড় পরিয়ে অন্ততপক্ষে সাতটি বাড়িতে ঘোরানো হয়।
এই জেলার বসিরহাট, বনগাঁ, অশোকনগর, দত্তপুকুর সহ বিভিন্ন এলাকায় বহু বাড়িতেও এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। রীতিমতো নিষ্ঠা সহকারে নিয়ম পালনের মধ্যে দিয়ে সন্ন্যাসীরা এই পুজোর রীতি রেওয়াজ সম্পন্ন করেন। এলাকার বহু মানুষ এই পুজোয় অংশ নেন। এই বিশেষ দিনে জেলার বিভিন্ন মন্দিরেও ভিড় লক্ষ্য করা যায়। পুজোকে কেন্দ্র করে যাতে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকেও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷
Rudra Narayan Roy