হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই, বর্তমানে সেই আতশবাজি প্রস্তুতকারকদের অবস্থা করুণ। অনেকেই বদলে ফেলেছেন পেশা। বাকি যারা যুক্ত রয়েছেন, তারাও পেটে টান পড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন। স্বল্প পরিমাণে কিছু পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি করলেও প্রশাসনের নজরদারির ফলে তা বিক্রি হচ্ছে না সেভাবে। ফলে মাথায় হাত জেলার আতশবাজি ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুনঃ ২০২৩ সালের মধ্যেই সাফল্যের শিখরে! ডিম উৎপাদনে দেশে ১ নম্বরে পৌঁছবে বাংলা
advertisement
আতশবাজি ব্যবসায়ীদের আবেদন, তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে যদি অল্প সময়ের জন্য হলেও, আতশবাজি জ্বালানোর অনুমতির দেয় প্রশাসন। বাঁচবে আতশবাজি শিল্প, বাঁচবে শিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবার।' গত বছরও আদালতের নির্দেশে শব্দ বাজির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। ফলে, উত্তর ২৪ পরগণার নীলগঞ্জ, নৈহাটির দেবকে হাজার হাজার টাকার বাজি তুললেও, তা বিক্রি করতে পারেননি বিক্রেতারা। ফলে বড় অঙ্কের ঋণের বোঝা চেপেছিল ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে। এ বছর তাই নতুন কোন বাজি তোলেননি কেউ।
গত বছরের তৈরি সেই পুরনো বাজি নিয়েই, এবছর ফের প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কোনওক্রমে বাজি বিক্রি করছেন তারা। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ এই পেশা ছেড়ে রিকশা চালানো, রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করছেন।
বাজি বিক্রেতারা জানান, 'করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কাজ খুঁজে পাওয়া দুস্কর হয়ে উঠেছে। এখানে বহু পরিবার বাজি তৈরি করেই পেট চালান। সে ক্ষেত্রে প্রশাসন যদি আমাদের দিকে না তাকায়, তবে আমাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোন গতি থাকবে না। আমাদের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থাও প্রশাসন করে দিতে পারেনি। এই বিপুল পরিমান ঋণের বোঝা নিয়ে এখন আমরা কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।'
জেলার এক আতশবাজি কারখানার মালিক জানান, 'হাইকোর্টের নির্দেশ জারি হওয়ার পর থেকেই এই ব্যবসা তলানিতে এসে ঠেকেছে। পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরি করলেও তেমনভাবে বিক্রি নেই। গত কয়েক বছরের ঋণের বোঝা এখনও সামলে ওঠা সম্ভব হয়নি। যদি আমাদের কথা ভেবে কিছুটা ছাড় দিত প্রশাসন সেক্ষেত্রে আমাদের পরিবারগুলো বেঁচে যেত।'
তবে লক্ষ্মী পূজার রাতেও যেভাবে শব্দ বাজির দাপাদাপি দেখা গেছে জেলায়, তাতে পুলিশের এই সক্রিয় তাকে একাংশের মানুষ সমর্থন করলেও, বাজি ব্যবসায়ীদের আর্থিক বিষয়টিও সরকারের দেখা উচিত বলেই মনে করছেন অনেকে।
রুদ্র নারায়ন রায়