প্রাচীন এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে হাজারও গল্পকথা। সেই সময় নৌকাবিহারে বেরিয়েছিলেন রাজা শিবচন্দ্র। ভাগীরথী হয়ে সুতি নদী ধরে এগোতেই ঝড় জলে আটকে পড়েন দত্তপুকুরে। ঝড় জলের সেই রাতে রাজাকে স্বপ্নে দেখা দেন মা দুর্গা। বলেন, “এখানে তালপাতার ঘর বানিয়ে আমার পুজো কর”। স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেরি করেননি শিবচন্দ্র। দত্তপুকুরে তালপাতার কুড়ে ঘর বানিয়ে দেবী দুর্গার বোধন করেছিলেন। এই পুজোকে উপলক্ষ্য করেই দত্তপুকুরে বসতিও স্থাপন করেন রাজা। পরবর্তীকালে রাজা শিবচন্দ্রের নামেই দত্তপুকুরের এই অঞ্চলের নাম হয় শিবালয়।
advertisement
আরও পড়ুন – Durga Puja 2023: ৩০ বছর ধরে মহালয়ার এই শুভদিনে মেয়ের হাতে মায়ের চক্ষুদান
শিবচন্দ্রের স্বপ্নে দেখা দেবী ছিলেন নৃসিংহের আদলে। মায়ের হাত এখানে দু’টি। বাকি আটটি লুকনো থাকে চুলের মধ্যে। দত্তপুকুরের শিবালয়ের এই পুজোকে স্থানীয়রা বুড়িমার পুজোই বলে থাকেন। কথিত আছে প্রথম বছরে স্থানীয় এক বুড়ি পুজোর আচারের কাজ করেছিলেন। সেই থেকেই দত্তপুকুরের শিবালয়ের দুর্গাপুজো বুড়িমার পুজো নামেই চলে আসছে। সাড়ে তিনশো বছর ধরে আজও নিয়ম এবং নিষ্ঠা মেনে কৃষ্ণপক্ষের শুরুতেই হয় দেবী দুর্গার বোধন। তারপর প্রতিদিন ভোগ এবং আরতি হয়। নবমী পর্যন্ত চলে চণ্ডীপাঠ। আখ, চাল, কুমড়ো এবং কলা বলি দেওয়ার রীতিও বহুদিনের।
দেবী দুর্গা এখানে সিংহবাহিনী নন। সিংহের বদলে আছে ঘোড়া। তবে সেই ঘোড়ার কেশর রয়েছে। আজ জেলার অন্যতম প্রাচীন পুজো এটি। পুজোর জন্য রয়েছে স্থায়ী মন্দির। আদিকালের নিয়ম মেনে আজও কায়পুত্রপাড়ার মানুষের কাঁধে চেপেই বেদিতে বসেন মা, বিসর্জনের সময়ও তাদের কাঁধে করেই পৌঁছে যান সুতি নদীর ঘাটে। জাগ্রত বুড়িমার এই পুজো দেখতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমান পূজোর কদিন। মনের ইচ্ছা মাকে জানালে কাউকেই নাকি খালি হাতে ফেরান না বুড়ি মা বলেই বিশ্বাস। এখন তাই বুড়িমার দালানে চলছে শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি।
Catch Special Coverage on দুর্গা পূজা 2023 | Durga Puja 2023 Celebration in West Bengal , বাঙালির দুর্গাপূজা 2023
Rudra Narayan Roy