গোলবাজার থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত গেলেই দেখা যাবে রানওয়ের (Runway) অংশবিশেষ। অশোকনগর মিলেনিয়াম পার্ক এর পাশে ইংরেজ আমলের তৈরি একটি গুপ্ত কক্ষও খুঁজে পাওয়া যায়। শোনা যায় সেই গুপ্ত কক্ষেই রাখা থাকতো ইংরেজ আমলে ব্যবহৃত গোলাবারুদ। এখনো সেই মাটির নিচের ঘরে বসবাস করে এক পরিবার। প্রায় দু'শো বছরের অধিক অস্তিত্ব এই বাড়িটির। রয়েছে দীর্ঘ প্রশস্ত রানওয়ে। স্থানীয় হরিপুর ভৈরবতলা ও নিবেদিতা পল্লি এলাকায় রয়েছে প্লেন রাখার পাঁচটি হ্যাঙ্গার।
advertisement
এছাড়াও প্লেন ওঠানামা সিগনালিং ব্যবস্থার জন্য সিগনালিং রুমেরও অস্তিত্ব রয়েছে। যা গোলঘর নামে পরিচিত। অনেকেই একে ফাঁসি ঘরও বলে থাকেন। শোনা যায় পরবর্তীকালে এখানে ১২ জন নীলচাষী কে ফাঁসি দেওয়ার হয়েছিল। হাবরা থেকে কচুয়া মোড় পর্যন্ত ছিল এফসিআই গোডাউন এ আসার ট্রেন লাইন খাদ্য সামগ্রী মজুদ করা হতো সেখানেই। আজও সে সবের চিহ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এখানকার জনপদে।
১৯৪৬ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে সৈন্যেরা ফিরে যায়। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যুদ্ধবিমানও। পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটি ভরে ওঠে বন-জঙ্গলে। শিয়াল, বুনো শুয়োর, বিষাক্ত সাপেরা আস্তানা গাড়ে সে সব জায়গায়। ইতিমধ্যে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ওপার বাংলা থেকে আসতে শুরু করে উদ্বাস্তু মানুষ। হাবরা ও সংলগ্ন এলাকায় তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে বিমান ঘাঁটি ও সেনা ছাউনিতে উদ্বাস্তুদের জন্য ক্যাম্প খোলা হয়। ঠিক হয়, পরিত্যক্ত ওই সব বিমানঘাঁটিতে তৈরি হবে উপনগরী।
\"হাবরা আরবান কলোনি\" ও \"হাবরা রুরাল কলোনি\" এই দু’টি অংশে ভাগ করে উন্নয়নের পরিকল্পনা হয়। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা শ্যামাপদ চক্রবর্তী জানালেন, আগে যখন আমরা এসেছিলাম তখন এই জায়গা জঙ্গলে ঢাকা ছিল, পরিত্যক্ত রানওয়ে তখন জনকল্যাণ পল্লী থেকে গোলবাজার অব্দি বিস্তৃত ছিল। তবে আজকের শহরে দাঁড়িয়ে আর চেনা যায়না পুরোনো অশোকনগর কে।' তবে আজকের সময় দাঁড়িয়ে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে এই সমস্ত ইতিহাস। অশোকনগর বাসীদের দাবি, ইংরেজ আমলের এই ইতিহাস গুলিকে সংরক্ষন করা সম্ভব হলে ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।