শিশুদের কেন স্কুলে ফেরা (School Opening) খুব দরকার, দেখে নিন কারণ।
মৃদু উপসর্গ - প্রায় সমস্ত চিকিৎসকই বলছেন, করোনা মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে শিশুর শরীরে। এখনও পর্যন্ত কোভিডের তিনটি ঢেউয়েই শিশুর শরীরে কোভিডের মৃদু উপসর্গ দেখা গিয়েছে। যা এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে গিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুসারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় মাত্র ১২ শতাংশ আক্রান্ত ছিলেন, যাঁদের বয়স ২০ বছরের কম। হাসপাতালে ভর্তি করার ক্ষেত্রেও একই ধারা বজায় থেকেছে।
advertisement
টিকাকরণ - চিকিৎসক ও টিকা বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের, বিশেষত য়াদের বয়স ১২ বছরের কম, তাঁদের টিকাকরণের তেমন কোনও প্রয়োজন নেই। NTAGI-এর প্যানেলভুক্ত চিকিৎসক ও অতিমারি বিশেষজ্ঞ জয়প্রকাশ মুলিইল জানিয়েছেন, তাঁরা সরকারকে ইতিমধ্যে বলেছেন, শিশুরা ঠিক আছে, ১২ বছরের কম বয়সের শিশুদের টিকাকরণের প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, চিকিৎসক গগণদীপ ক্যাং জানিয়েছেন, শিশুদের টিকাকরণের আগে ভারতকে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।
আরও পড়ুন: বাজেটে ট্যাক্স ছাড়? জনতার বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোয় কী পরিকল্পনা কেন্দ্রের?
অনলাইন ক্লাস সমাধান নয় - অনলাইন ক্লাস সমাধান নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একটি শিশুর সামাজিক, মানসিক বিভিন্ন প্রতিবর্ত ক্রিয়া বা ব্যবহার অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব নয়। আজমি প্রেমজি ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার ফলে কম বয়সের পড়ুয়াদের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়ছে। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৯২ শতাংশ পড়ুয়া যে কোনও একটি ভাষায় শিক্ষা ভুলে গিয়েছে, ৮২ শতাংশ পড়ুয়া ভুলে গিয়েছে অঙ্কের কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম। ক্লাস ২ থেকে ৬-এর মধ্যের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটেছে।
শারীরিক ও মানসিক উপসর্গ - কী কী হচ্ছে এই অনলাইন ক্লাসের প্রভাবে। ড্রাই আইস, ওবেসিটি, ভিটামিন ডি-এর অভাব, ঘুমের সমস্যার মতো একাধিক সমস্যা করোনা কালে দেখা দিয়েছে বাচ্চাদের মধ্যে। করোনা কালে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু শারীরিক উপসর্গের কথাও বলছেন। ভারতীয় শিশু চিকিৎসা অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে একটি গবেষণাপত্রেও এই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেটের আগেই ক্ষোভে ফুঁসছে বিরোধীরা, কারণ লুকিয়ে অধিবেশনের প্রথম দু-দিনে!
অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো - ভারতের মতো দেশে প্রতিটি ঘরে একাধিক স্কুল পড়ুয়া শিশুর জন্য একই সময়ে একাধিক ক্লাসের ব্যবস্থা করে, ফোনের স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। School Children’s Online and Offline Learning-- নামে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল ২০২১ সালের অগস্ট মাসে। ১৪০০ জনের মধ্যে দেখা গিয়েছিল, মাত্র ৮ শতাংশ অনলাইনে নিয়মিত পড়াশোনা করছে। ৩৭ শতাশং একেবারেই কোনও ক্লাস করছে না, ফলে সামান্য সহজ বানানও ভুলতে বসেছে। ভারতের এই প্রবণতা মারাত্মক। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ স্কুল ছুট পড়ুয়াদের উপার্জনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে বলেছেন, এক বার শ্রম বাজারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়া মানে স্কুল জীবনে ফেরা অত্যন্ত কঠিন।
ছাত্রীদের বিষয়টি আলাদা - স্কুল বন্ধ থাকার কারণে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে ছাত্রীদের উপর। জাতীয় শিক্ষার অধিকার ফোরাম অনুসারে, মধ্যস্তর থেকে প্রায় ১ কোটি ছাত্রী স্কুল ছুট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছাত্রীদের স্কুল ছুট হওয়ার প্রবণতা তাদের অপরিণত বয়সে বিয়ের দিকে ঠেলে দেবে আরও বেশি করে, যা মারাত্মক।
পরিবার ও শিক্ষকরা টিকা পেয়েছেন - স্কুল বন্ধ করার অন্যতম কারণ ছিল এটাই যাতে শিশুদের থেকে শিক্ষক ও তাদের পরিবারের মানুষেরা করোনা আক্রান্ত না হন। এখন তো পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য কোভিডের টিকা পেয়ে গিয়েছেন, টিকা পেয়েছেন শিক্ষকরাও। তাহলে কেন স্কুল বন্ধ করে রাখা হচ্ছে।