চিঠিতে বরুণ গান্ধি প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে গত এক বছরে সাতশো কৃষকের মৃত্যু হয়েছে৷ তাঁর দাবি, যে কৃষকরা আন্দোলন করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি টাকা করে দিতে হবে৷
আরও পড়ুন: জিলিপি-বাজি-নাচ! কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণায় সিঙ্ঘু-টিকরি বর্ডারে উৎসবের মেজাজ...
advertisement
এর পাশাপাশি আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে যে মামলাগুলি করা হয়েছিল, সেগুলিও প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বরুণ গান্ধি৷ কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হলেও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার ব্যবস্থাকে আরও বিস্তৃত করার দাবিতে কৃষকরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকেও সমর্থন করেছেন বরুণ৷ তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই দাবি পূরণ ছাড়া কৃষকদের আন্দোলন থামবে না৷ এর পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে চার কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছেন বরুণ গান্ধি৷
চিঠিতে নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বরুণ গান্ধি লিখেছেন, 'তিনটি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে আপনার বড় মনের পরিচয় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ৷ এই আন্দোলনে অত্যন্ত কঠিন এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাতশোর বেশি কৃষক ভাই বোন শহিদ হয়েছেন৷ আমি বিশ্বাস করি এই সিদ্ধান্ত আগেই গ্রহণ করা হলে এই নিরীহ জীবনগুলি রক্ষা পেত৷'
আরও পড়ুন: তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার, দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বড় ঘোষণা নরেন্দ্র মোদির
ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বরুণ গান্ধি প্রধামন্ লিখেছেন, 'কৃষকদের আন্দোলন এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শেষ হবে না এবং কৃষদের মধ্যে ক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়বে৷ বিভিন্ন ভাবে তা প্রকাশ পাবে৷ ফলে কৃষকদের জন্য নূন্যতম সহায়ক মূল্য নিয়ে নিশ্চয়তা পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কৃষিপণ্যের খরচ এবং মূল্য নির্ধারণ কমিশনের ঠিক করে দেওয়া ফর্মুলাতেই তা হওয়া উচিত৷'
চিঠিতে বরুণ গান্ধি অভিযোগ করেছেন, যেভাবে বিজেপি-র শীর্ষ পদে থাকা একাধিক নেতা আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে একের পর এক উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন, তার জেরেই লখিমপুর খেরির ঘটনা ঘটেছে৷ বরুণ গান্ধির অভিযোগ, ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরির যে ঘটনা ঘটেছে তা দেশের গণতন্ত্রের উপরে কালো দাগ ফেলে দিয়েছে৷ নরেন্দ্র মোদির কাছে বরুণ গান্ধির দাবি, 'আপনার কাছে আমার অনুরোধ, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক, যাতে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব হয়৷
লখিমপুর খেরির ঘটনা নিন্দায় সরব হয়েছিলেন বরুণ গান্ধি৷ নিহত কৃষকদের পরিবারগুলির জন্য ন্যায়বিচার চান তিনি৷ তারপরই তাঁকে বিজেপি-র সর্বভারতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়৷ কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদেরও সমর্থন জানিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ৷ ২০০৪ সালে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বরুণ গান্ধি এবং তাঁর মা মানেকা গান্ধি৷ কিন্তু গত কয়েক বছরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের ক্রমশ অবনতি হয়েছে৷