গুজরাতের রিলায়েন্স জামনগর রিফাইনারি কমপ্লেক্সে গ্রিন বেল্টে তৈরি বনতারা পৃথিবীজোড়া সংরক্ষণের বিষয়টিকে আলাদা করে গুরুত্ব দিতে চায়৷ বিভিন্ন ধারায় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে পশু চিকিৎসার ও সুরক্ষার একটি ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে বনতারায়৷ সেখানে তৈরি হয়েছে একেবারে জঙ্গলের মতো একটি পরিবেশ, যেটি আহত পশুদের প্রাকৃতিক, সামাঞ্জস্যপূর্ণ ও জঙ্গলের সভ্যতার একটি স্বাধীনতা প্রদান করেছে৷
advertisement
প্রাথমিক বাধা টপকে, বনাতারার কর্মীরা অনেক নতুন-নতুন ধরণ আবিস্কার করেছে যাতে একটি হাতিকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়৷ একটি গাড়ি পরিষ্কার করার স্প্রে-এর মতো যন্ত্র হাতির স্নানের জন্য ব্যবহার করা হয়, এ ছাড়া একটি লম্বা বাঁশের টুকরো দিয়ে আহত হাতির গায়ে মলম দেওয়া হয়৷ ব্যথা কমানোর জন্য খাওয়ার যে ওষুধ হাতিকে দেওয়া হয়, সেটিও একেবারে প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন ফল, গুড়, রাগি লাড্ডু থেকে দেওয়া হয়৷ আরে মোতিপ্রসাদের ক্ষেত্রে তাঁর মাহুতের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ফলেও উপকার হয়েছে অনেক৷
এর ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দেখা যায়, হাতিটির দ্রুত, সামগ্রিক ভাবে চিকিৎসার দরকার৷ দিনে দু’বার করে হাতির ড্রেসিং করার ব্যবস্থা করা হয়৷ এ ছাড়া দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক, পেনকিলার ও অন্য অনেকগুলি ওষুধ৷ নিয়মিত বিভিন্ন স্নায়ুর ওষুধও তাকে দেওয়া হয়৷ পাশাপাশি হাতির খাবারের দিকেও ছিল বিশেষ নজর৷ এ ছাড়াও পায়ের ক্ষত সারাতে বিশেষ রকম একটি রাবার ম্যাটও আনা হয়েছিল কানাডা থেকে৷
চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রতি এক দিন অন্তর হাতিটিকে নার্ভ টনিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়৷ তাতে দ্রুত ক্ষত সারতে থাকে৷ দু’মাস খুব অত্যাধুনিক চিকিৎসার ফলে ও নিয়মিত ক্ষতে ড্রেসিং করার ফলে ধীরে ধীরে রোগ সারতে থাকে৷ মোতিপ্রসাদের খাবার ইচ্ছা বাড়তে থাকে৷ তিন মাসের মধ্যে সে একেবারে সেরে ওঠে৷ স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে থাকে৷ এখন সে প্রতিদিন আশ্রয়ের অন্য হাতিগুলিকে নিয়ে সকালে ও বিকেলে হাঁটতে বার হয়৷ গজরাজ নগরীতে তাঁদের যাতায়াত হয়৷
মারাত্মক এক ক্ষত থেকে ক্রমে স্বাভাবিক, সুস্থ জীবনের দিকে যাওয়ার পথে কী ভাবে বেঁচে ওঠা যায়, মোতিপ্রসাদ তার উদাহরণ৷ বনাতারার একাগ্র চিকিৎসা তাঁকে বাঁচিয়ে তুলেছে৷ প্রতিনিয়ত বিশেষ চিকিৎসা ও নতুন পথের আবিস্কারের মধ্যমে তার স্বাস্থ্যদ্ধার হয়েছে, যা জীবনের সকলের কাছেই বিশেষ অনুপ্রেরণার৷