অযোধ্যা রাম মন্দির উদ্বোধন লাইভ কভারেজ । Ayodhya Ram Mandir Inauguration LIVE
সেদিনের মধ্য পঞ্চাশের সরস্বতী দেবী নামে সেই মহিলার বয়স এখন ৮৫৷ তিন দশক পেরিয়ে আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় নবনির্মিত রাম মন্দিরে রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন সেই মৌনব্রত ভাঙবেন তিনি৷ তবে দূর থেকে নয়, অযোধ্যায় উপস্থিত থেকেই রাম মন্দিরে রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার সাক্ষী থাকবেন সরস্বতী দেবী৷ সোমবার রাতেই ধানবাদ থেকে অযোধ্যার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তিনি৷
advertisement
আরও পড়ুন: অ্যাপে বুক করে নেওয়া যাবে হোম স্টে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনের সময়ে কীভাবে দেখবেন উদ্বোধন
সরস্বতী দেবীর ছোট ছেলে হরে রাম আগরওয়াল জানিয়েছেন, মহন্ত নৃত্যগোপাল দাসের অনুগামীরাই তাঁর মাকে অযোধ্যায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ তিন দশক ধরে মৌনব্রত পালন করার জন্য মৌনি মাতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন৷ যেদিন থেকে রাম মন্দিরের নির্মাণকাজের ঘোষণা হয়েছে, সেদিন থেকেই আনন্দে ছিলেন তিনি৷
হরে রাম আগরওয়াল বলেন, যেদিন বাবরি মসজিদ ধংস হয়েছিল, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর শপথ নেন যে রাম মন্দির নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি মৌনব্রত পালন করবেন৷ মন্দিরের নির্মাণ কাজের ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই খুশি ছিলেন তিনি৷
সরস্বতী দেবীর ছেলে জানিয়েছেন, তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মৌনব্রত পালন করা সরস্বতী দেবী এবং তাঁর পরিবারের কাছেও সহজ ছিল না৷ সঙ্কেতের মাধ্যমেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতেন তিনি৷ জটিল কোনও বাক্য বোঝানো অথবা প্রয়োজনে তিনি তা লিখে দিতেন৷
তবে ২০২০ সাল পর্যন্ত দিনে একবার মৌনব্রত থেকে সাময়িক বিরতি নিয়েছিলেন সরস্বতী দেবী৷ ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুরে একঘণ্টা কথা বলতেন তিনি৷ তবে ২০২০ সালের ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাম মন্দিরের ভিত পুজো করার পর থেকে ফের একবার সম্পূর্ণ মৌনব্রত পালন শুরু করেন তিনি৷
সরস্বতী দেবীর আট সন্তান৷ তাঁর মধ্যে চার জন ছেলে, চার জন মেয়ে৷ সরস্বতী দেবীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ১৯৮৬ সালে তাঁর স্বামী দেবিকানন্দন আগরওয়ালের মৃত্যুর পর থেকেই নিজের জীবন শ্রী রামেকে সঁপে দেন সরস্বতী দেবী৷ তার পর থেকে অধিকাংশ সময় তীর্থ করেই জীবন অতিবাহিত করেছেন সরস্বতী দেবী৷
২০০১ সালে নিজের সন্তানদের জন্য মধ্যপ্রদেশের চিত্রকূটে সাত মাস তপস্যা করেছিলেন সরস্বতী দেবী৷ কথিত আছে, বনবাসের সময় চিত্রকূটে একটা দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন রামচন্দ্র৷
সরস্বতী দেবীর পুত্রবধূ ইন্নু আগরওয়াল জানিয়েছেন, প্রতিদিন ভোর চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে পড়তেন তাঁর শাশুড়ি৷ তার পর সকালবেলা ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ধ্যান করতেন তিনি৷ প্রতিদিন বিকেলে সন্ধ্যা আরতি সেরে রামায়ণ, গীতা পাঠ করতেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, দিনে একবারই নিরামিষ খাবার খেতেন সরস্বতী দেবী৷ খাদ্য তালিকায় থাকত ভাত, রুটি এবং ডাল৷ এ ছাড়া সকাল এবং বিকেলে এক গ্লাস করে দুধ পান করতেন ওই বৃদ্ধা৷ প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, তাঁরা কখনও সরস্বতীদেবীকে কথা বলতে দেখেননি৷