পুলিশ সূত্রের খবর, নীলম হিসারের রেড স্কোয়ার মার্কেটের পিছনের একটি পিজিতে থাকতেন। পিজিতে থেকেই হরিয়ানা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নীলম। গত ২৫ নভেম্বর, বাড়ি যাচ্ছেন বলে তিনি পিজি থেকে বের হন। পিজি-র এক বোর্ডার জানিয়েছেন, রাজনীতিতেও উৎসাহী ছিলেন এই নীলম৷
যদিও এদিন ধরা পড়ার পরে নীলম দাবি করেছেন, তাঁকা ছাত্রছাত্রী৷ তাঁরা বেকার৷ তাঁদের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের কোনও সম্পর্ক নেই৷ নীলম বলেন, ‘‘আমাদের বাবা-মা শ্রমিক। ছোট কৃষক। সরকার আমাদের উপরে জুলুম করছে। কিছু বলতে গেলেই লাঠিপেটা করে, জেলে ভরে দেয়৷ আমাদের কথা কেউ শোনে না, সব জায়গায় আমাদের কণ্ঠস্বর দমনের চেষ্টা করা হয়।’’ এরপরেই ‘ভারত মাতা কী জয়’, ‘তানাশাহী নেহি চলেগি (স্বৈরাচার চলবে না)’ স্লোগান তোলেন তিনি৷
advertisement
সূত্রের খবর, নীলমরা দাবি করেছেন, দেশের বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির ইত্যাদির মতো গুরুতর বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জবাবদিহি চাইতেই বুধবার এই পদক্ষেপ করেছেন তাঁরা৷ যদিও আরেকটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মণিপুরের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়েও প্রতিবাদ করেছেন তাঁরা৷
জানা গিয়েছে, নীলম সিং অত্যন্ত উচ্চ শিক্ষিত৷ তাঁর এমএ, বিএড, এমফিল ডিগ্রি রয়েছে৷ নেট-ও পাশ করা৷ তা সত্ত্বেও ৪২ বছরে দাঁড়িয়েও তিনি বেকার৷ কর্মহীন তরুণী৷ এর আগে কৃষক আন্দোলনে, কুস্তিগীরদের বিক্ষোভস্থলেও যোগ দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ তেমনটাই দাবি পুলিশের৷ শুধু তাই নয়, নীলমের পরিবারের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, সে ভগৎ সিং এবং বি আর অম্বেদকরের অনুরাগী৷ মাঝেমধ্যেই ছোটদের মধ্যে ভগৎ সিংয়ের বই বিতরণ করতেও দেখা যায় তাঁকে৷ যদিও, বিজেপি নেতা অমিত মালব্য, এই নীলমকে ‘আন্দোলনজীবী’ বলে কটাক্ষ করেছেন তাঁর নিজের পোস্টে৷
বুধবার, ঘড়িতে তখন ১টা বেজে ২ মিনিট৷ সংসদে জিরো আওয়ার চলছে৷ বক্তৃতা করছেন খগেন মূর্মূ৷ হঠাৎই দর্শকাসন থেকে সাংসদদের বেঞ্চে লাফিয়ে পড়লেন এক যুবক৷ সাংসদদের একের পর এক বেঞ্চ টপকে অধ্যক্ষের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ সঙ্গে ওঠে, ‘তানাশাহী নেহি চলেগি (স্বৈরাচার চলবে না)’, ‘ভারত মাতা কী জয়’, ‘জয় ভিম, জয় ভারত’ স্লোগান৷
এর মধ্যেই অবশ্য তড়িঘড়ি লোকসভার অধিবেশন স্থগিত করে দেন অধ্যক্ষ৷ ততক্ষণে, ভিজিটার্স গ্যালারি থেকে উড়তে শুরু করেছে হলুদ ধোঁয়া৷ প্রথমে সাংসদদে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও পরে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যান দুই তরুণ৷ নাম, সাগর শর্মা এবং ডি মনোরঞ্জন (৩৫)৷
সাগর শর্মাই সাংসদদের বেঞ্চে লাফ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ হলুদ ধোঁয়া ওড়াচ্ছিলেন ডি মনোরঞ্জন৷ মনোরঞ্জন কর্ণাটকের মাইসুরুর বাসিন্দা৷ সেখানকার একটি কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র সে৷ যে মাইসুরুর বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিংহর কাছ থেকে সংসদে ঢোকার পাস পেয়েছিলেন তাঁরা৷
এদিকে, সংসদের অন্দরে যখন এই ঘটনা ঘটছে, ঠিক সেই সময়ই বাইরে সংসদ ভবন চত্বরের পরিবহণ দফতরের বাইরে হলুদ ধোঁয়া উড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় এক মহিলা ও এক তরুণকে৷ তাঁদেরও সেই সময় গ্রেফতার করে পুলিশ৷