TRENDING:

Opinion | কংগ্রেসের শূন্য কোষাগার এবং বৃথা প্রতিশ্রুতি

Last Updated:

Opinion | Congress’ Empty Coffers and Emptier Promises: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদর দফতর ২৪, আকবর রোড থেকে ইন্দিরা ভবন, কোটলা মার্গ, নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের পর ১০০ জনেরও বেশি এআইসিসি কর্মী- পূর্ণকালীন, পুনর্নিযুক্ত কর্মী এবং অস্থায়ী কর্মী- অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছেন।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
Rasheed Kidwai
AICC karamcharis see Rahul Gandhi as a sensitive person with a strong ethical compass, inclined to support their cause. (AP Photo)
AICC karamcharis see Rahul Gandhi as a sensitive person with a strong ethical compass, inclined to support their cause. (AP Photo)
advertisement

নয়াদিল্লি: যখনই রাহুল গান্ধির কুলি, মুচি, ট্রাকচালক, সবজি বিক্রেতা এবং অন্যান্য সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার দৃশ্য টিভি চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়, তখনই ২৪, আকবর রোডে অবস্থিত অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) সদর দফতরের অসংখ্য কর্মচারী (সচিব বিষয়ক কর্মীরা) আগ্রহ, উৎসাহ এবং তাঁদের মুখে ভেসে ওঠা একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকেন: “রাহুলজি হামারে পাস কব আয়েঙ্গে?” (রাহুল গান্ধি কখন তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন?)

advertisement

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদর দফতর ২৪, আকবর রোড থেকে ইন্দিরা ভবন, কোটলা মার্গ, নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের পর ১০০ জনেরও বেশি এআইসিসি কর্মী- পূর্ণকালীন, পুনর্নিযুক্ত কর্মী এবং অস্থায়ী কর্মী- অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছেন। এআইসিসি (The All India Congress Committee (AICC)) সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে থেকে শুরু করে অসংখ্য সাধারণ সম্পাদক, সচিব এবং বিভাগীয় প্রধানরা, আকবর রোড থেকে কোটলা মার্গে মাত্র ৪.৪ কিলোমিটার দূরে সরে গেলেও, ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি থেকে দলের সেবায় নিযুক্ত শীর্ষ নেতৃত্ব এবং কর্মীবাহিনীর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য মানসিক বিচ্ছিন্নতা দেখা দিয়েছে।

advertisement

আরও পড়ুন– পচা সবজি, ছত্রাকে ধরা বাঁধাকপি, মশলায় পোকা, ফ্রিজে পশুর কাটা মাথা ! মোমো কারখানার এহেন দৃশ্য দেখে ঘুম উড়ল মোমো-প্রেমীদেরও

এই কর্মচারীরা, যাঁরা কেরানি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন এবং বিভিন্ন এআইসিসি কর্মকর্তা, যাঁরা অফিস এবং তার নানা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ সাল থেকে নতুন ইন্দিরা ভবন প্রাঙ্গণে কাজ করতে বলা হয়নি। তাঁদের জন্য স্বেচ্ছা অবসর প্রকল্প (VRS) বা কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণের কোনও লক্ষণও চোখে পড়ছে না।

advertisement

ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধি, পি ভি নরসিমহা রাও, সীতারাম কেশরী, সনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি এবং মল্লিকার্জুন খড়গের সঙ্গে কাজ করা এই কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ অনুভব করছেন যে, তীব্র আর্থিক সংকটের মুখোমুখি এই প্রাচীন দলটির কাছে তাঁদের দেওয়ার মতো খুব কমই রয়েছে বা কিছুই নেই বললেও চলে। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন যে আর্থিক দিক থেকে সম্পূর্ণরূপে অচল এবং শুষ্ক অবস্থায় চলে যাবেন। যোগাযোগের অভাব তাঁদের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব, যা তাঁদের প্রতি মনোযোগী এবং যত্নশীল বলে পরিচিত ছিল, এখন কোনও গুরুতর আলোচনার জন্য তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।

advertisement

আরও পড়ুন– ৫ বার বিয়ের পিঁড়িতে বসেও সংসার করা হয়নি, সৎ ভাই করেছিলেন প্রতারণা, প্রচুর কাজ করলেও শেষ দিকে অভিনেতার ছিল না জলের বোতল কেনার পয়সা

এই পটভূমিতে, রাহুল গান্ধির প্রতি তাঁদের প্রত্যাশা কিছুটা হলেও বিপরীতমুখী। সচিবালয়ের কিছু কর্মী, যাঁরা সনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কার গান্ধি ত্রয়ীতে অন্ধ বিশ্বাস রাখেন, তাঁরা মনে করেন যে লোকসভার বিরোধী দলনেতা তাঁদের দাবি গ্রহণ করবেন এবং তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করবেন। এআইসিসি কর্মীরা রাহুলকে একজন সংবেদনশীল ব্যক্তি হিসেবে দেখেন যাঁর একটি শক্তিশালী নীতিবোধ রয়েছে এবং তিনি তাঁদের দাবিকে সমর্থন করার জন্য আগ্রহীও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে, একজন প্রবীণ এআইসিসি কর্মচারী বলেন, “রাহুলজি সর্বদা দিনমজুর, কৃষক, শিল্প শ্রমিক, ট্রাক চালক এবং মুচিদের দুর্দশার প্রতি মনোযোগী। তিনি অবশ্যই আমাদের জন্য একটি ভাল চুক্তি নিশ্চিত করবেন। তিনি এবং তাঁর পরিবার ১৯৭৮ সাল থেকে কংগ্রেসে আমাদের সামান্য অবদানকেও স্বীকৃতি দিচ্ছেন, যখন দলটি ক্ষমতার বাইরে ছিল এবং একই রকম অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছিল।”

ওয়াকিবহাল সূত্রের মতে, ২৪, আকবর রোডের দফতর কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কাছে ফেরত দেওয়া হলে, চাকরি এবং কর্মজীবনের অস্পষ্টতার পাশাপাশি এআইসিসি কর্মীরা তাঁদের বাড়ি এবং আবাসিক এলাকাও হারাতে চলেছেন।

২৪, আকবর রোড, মূলত এডউইন লুটেন্সের দিল্লির টাইপ VIII বাংলো ছিল, বর্তমানে যা অসংখ্য আউটহাউজ এবং নিচু ছাদের কাঠামোতে পরিণত হয়েছে, যেখানে পার্টির কর্মী এবং তাঁদের পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এই বাড়িগুলির প্রতিটিতে এখন একটি বিদ্যুৎ মিটার, একটি স্যাটেলাইট ডিশ, একটি রেফ্রিজারেটর এবং একটি এয়ার-কন্ডিশনার বা এয়ার কুলার রয়েছে। এই নির্মাণগুলির বেশিরভাগই শুরু থেকেই অননুমোদিত ছিল, কিন্তু পরবর্তী রাজনৈতিক শাসনগুলি এই বিষয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। প্রকৃতপক্ষে, কংগ্রেস-শাসিত দিল্লিতে প্রতিবারই নগর উন্নয়ন বা গৃহমন্ত্রী নিয়মগুলিকে আরও নমনীয় করে এবং অমান্য করে দলের প্রতি আনুগত্য প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন, যার ফলে ২৪, আকবর রোডকে ভেতর থেকে সম্প্রসারিত হতে দেওয়া হত।

এই বিষয়ে এআইসিসির সচিবালয়-কর্মীরা অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন। ১৯৯৮ সালে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দিগ্বিজয় সিং ক্ষমতায় ফিরে আসার পর, তিনি প্রতিটি এআইসিসি কর্মীকে একটি করে দামি ডিনার সেট উপহার দিয়েছিলেন । প্রতিবারই যখন এআইসিসি কর্মীর ছেলে বা মেয়ের বিয়ে হত, তখন সোনিয়া গান্ধি উদারভাবে তাঁর নিজস্ব তাঁত এবং সিল্কের সংগ্রহ থেকে দামি শাড়ি উপহার দিতেন। ২৪, আকবর রোডের বিশাল লনটিও তাঁদের বিবাহের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হত।

এই এআইসিসি কর্মীদের বেশিরভাগেরই ভাগ করে নেওয়ার মতো অসংখ্য গল্প রয়েছে, যাঁরা ইন্দিরা, সঞ্জয়, রাজীব, সোনিয়া এবং রাহুল গান্ধির পাশাপাশি নরসিংহ রাও, সীতারাম কেশরী, আহমেদ প্যাটেল, জিতেন্দ্র প্রসাদ, গুলাম নবি আজাদ, মহসিনা কিদওয়াই, অম্বিকা সোনি, প্রণব মুখোপাধ্যায়, ড. করণ সিং, নটবর সিং, মনমোহন সিং, মতিলাল ভোরা এবং মাধবরাও সিন্ধিয়ার মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। কেউ কেউ এও মনে করে বলে দেন যে, ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি যখন বাংলোটি দলীয় সদর দফতরে রূপান্তরিত করা হয়েছিল, তখন তাঁদের একজন সহকর্মী, শোভন সিং (প্রয়াত) সবার প্রথমে ২৪, আকবর রোডে প্রবেশ করেছিলেন।

এ আর অন্তুলয়, বুটা সিং, এ পি সিং, বি পি মৌর্য এবং কোষাধ্যক্ষ প্রণব মুখোপাধ্যায় সবচেয়ে বড় কক্ষটি, যা পূর্বে বসার এবং খাওয়ার ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হত, কংগ্রেস সভাপতির কার্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। একটি বেতের চেয়ার এবং একটি ছোট টেবিল কেবল তখন ছিল, দেয়ালগুলি খালি ছিল। মেঝেতেও কোনও কার্পেট ছিল না- এমনকি একটি পাপোষও ছিল না। বুটা সিং একটি শোওয়ার ঘর দখল করেন এবং অফিসকর্মীদের নিযুক্তির জন্য সেখানে সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করেন।

২০০৯ সালের মধ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে ৫২ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন যিনি সেই শোভন সিং একবার স্মরণ করে বলেছিলেন, ‘‘বুটা সিংজি বলেছিলেন যে দল আমাকে মাসে আটশো টাকা বেতন দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই যা কিন্তু আমি পাচ্ছিলাম। আমি বলেছিলাম যে আমি বেতন ছাড়াই কাজ করব।’’

আর এখন, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে, এআইসিসি কর্মীরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে এখনও পর্যন্ত কেউ তাঁদের জানাতেও এগিয়ে আসেননি যে দলের কাছে তেমন কিছু দেওয়ার নেই। কেউ কেউ ভিআরএসের জন্য আশাবাদী, আবার কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে তাঁদের ছাড়া নতুন পার্টি অফিসে কোনও ফাইল নড়তেই পারবে না!

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ফাঁকা জায়গার লাগবে না, আমবাগানেই হচ্ছে কুইন্টাল কুইন্টাল ফলন! বিনা ব্যয়ে লাভ পাচ্ছেন চাষি
আরও দেখুন

Disclaimer: লেখক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন ভিজিটিং ফেলো। একজন সুপরিচিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক, তিনি ‘২৪ আকবর রোড’ এবং ‘সনিয়া: আ বায়োগ্রাফি’-সহ বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। উপরের লেখায় প্রকাশিত মতামত ব্যক্তিগত এবং সম্পূর্ণই লেখকের নিজস্ব- তা নিউজ18-এর মতামতকে প্রতিফলিত করে না।

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
Opinion | কংগ্রেসের শূন্য কোষাগার এবং বৃথা প্রতিশ্রুতি
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল