বর্তমানের এলএইচবি (লিংক হফমেন বুশ) কোচগুলিকে দুটি পাওয়ার কারের সাথে অন এন্ড অন জেনারেশন (ইওজি) সিস্টেমে চালানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে দু’দিকে দুটি ডিজি সেট স্থাপন করা আছে। এলএইচবি কোচে বিদ্যমান দুটি জেনারেটরের স্থান নেবে নতুন এইচওজি প্রযুক্তি। এই নতুন সিস্টেমে প্যান্টোগ্রাফের মাধ্যমে ওভারহেড পাওয়ার লাইন থেকে ট্রেনের ইঞ্জিনে পাওয়ার সাপ্লাই দেওয়া হয় ৷ যা ট্রেনের লাইটিং, এয়ার কন্ডিশনিং, ফ্যান ও বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে চলা অন্যান্য উপকরণের জন্য ট্রেনের কামরাগুলিতে বিতরণ করে।
advertisement
যেহেতু সমগ্র উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অংশকে রেলের বৈদ্যুতিকরণের জন্য অনুমোদন জানানো হয়েছে, তাই এন.এফ. রেলওয়ের পুরনো এলএইচবি কোচের ট্রেনগুলিকে অনুবর্তী হিসেবে তৈরি করতে বিভিন্ন ডিপোতে পবিবর্তন করা হচ্ছে। পূর্ববর্তী বছরে (যথা ২০২১-২২) ২৭টি ট্রেনের ৫৭টি রেকের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৩১টি ট্রেনের ৬৪টি রেক এইচওজি অনুবর্তী হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। শক্তি উৎপন্ন উপকরণের সংখ্যা হ্রাস, লো মেন্টেন্যান্স ও ট্রেনের ওজন কম হওয়ায় নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে যে পাওয়ার জেনারেটর কার ব্যবহার করা হচ্ছে, তা ঘণ্টা প্রতি প্রায় ১০০ লিটার ডিজেল খরচ করে, তাই চলাচলের সময় ব্যাপক শব্দ, ধোঁয়া নির্গমনের পাশাপাশি পরিচালনার ব্যয়ও যথেষ্ট। এই নতুন এইচওজি প্রযুক্তিতে পরিবর্তনের ফলে ফুয়েল বিল ব্যাপকভাবে সাশ্রয় হবে, যার ফলে ফুয়েল আমদানি করার জন্য মূল্যবান বিদেশি মুদ্রারও সাশ্রয় হবে। বর্তমানে ডিজেলের মাধ্যমে প্রতি ইউনিট পাওয়ারের ব্যয় হয় প্রায় ২২ টাকা এবং এইচওজি প্রযুক্তির ফলে এটি হবে প্রতি ইউনিট ৬ টাকা।
এছাড়াও প্রত্যেকটি ডিজেল জেনারেটর প্রতি বছর প্রায় ১৭২৪.৬ টন CO2 এবং ৭.৪৮ টন NOX উৎপন্নের দ্বারা বায়ু দূষণ করার পাশাপাশি ১০০ ডিবি শব্দ উৎপন্নও করে। নতুন এইচওজি প্রযুক্তির ফলে শব্দহীনতার পাশাপাশি শূন্য CO2 এবং NOX নির্গমন হবে। এই ধরনের দুটি জেনারেটর কারের স্থানে জরুরি কাজে ব্যবহারের জন্য একটি স্ট্যান্ডবাই সাইলেন্ট জেনারেটর কার থাকবে। অন্য দুটি জেনারেটর কারের স্থানে এলএসএলআরডি (এলএইচবি সেকন্ড লাগেজ, গার্ড ও দিব্যাঙ্গ) কোচ থাকবে।
লাগেজ গার্ড রুম ও অতিরিক্ত যাত্রীর জন্য জায়গা দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ ট্রেনে ব্যবহার করার জন্য এই এলএসএলআরডি-এর ওভারহেড সাপ্লাই থেকে শক্তি রূপান্তর করার ক্ষমতাও থাকবে। এর পাশাপাশি কোচিং ডিপোর পিট লাইনগুলিতে এলএইচবি রেকের পরীক্ষা ও প্রি-কুলিং-এর জন্যও এই ডিজেল চালিত পাওয়ার কারগুলি (ইওজি)ব্যবহার করা হয়, যা প্রতি রেকের জন্য প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা সময় নেয়। এই কারণে বায়ু ও শব্দ দূষণ সৃষ্টির পাশাপাশি ডিজেল ফুয়েলের ব্যয়ও যথেষ্ট হয়।