ঘন ঘন দল পরিবর্তন ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক দল থেকে শুরু করে ডানপন্থী দলের সঙ্গে মিলে যাওয়া বা দলিত অধিকার নিয়ে সোচ্চার হওয়া- যে কোনও ভূমিকায় নীতীশ কুমার দক্ষ। নীতীশ কুমার সুশাসক কি না এর উত্তর জানেন বিহারের সাধারণ মানুষই, তবে অসম্ভবকে সম্ভব করার রাজনৈতিক ক্ষমতা কার রয়েছে এই প্রশ্ন অবশ্যই রাজনৈতিক মহলের একবাক্যে উত্তর হবে নীতীশ কুমার।
advertisement
আরও পড়ুন- জেডিইউ ভাঙতে চান অমিত শাহ, অভিযোগ নীতীশের,'বিশ্বাসঘাতক' বলে পালটা আক্রমণ বিজেপির
“যদি তিনি তাঁর নয়া আন্দোলনের মাধ্যমে এখন যা করছেন তার গতি ধরে রাখেন, তাহলে বিহারের ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন, যেখানে ৪০ টি গুরুত্বপূর্ণ আসনে ভোট হবে, তা বিজেপির জন্য সত্যিকারের যুদ্ধক্ষেত্র হিসাবে প্রমাণিত হবে,” বলেন সিপিআইএমএল(এল) সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
৭১ বছর বয়সী নীতীশ কুমার রেকর্ড অষ্টম বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। বিহার ইলেকট্রিসিটি বোর্ডে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন নীতীশ। সমাজতান্ত্রিক নেতা রাম মনোহর লোহিয়ার নেতৃত্বে রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি এবং ১৯৭০-এর দশকে জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনেও অংশ নিয়েছিলেন নীতীশ।
সমাজতান্ত্রিক দলের বহু বিভক্তি ও মিলমিশের পর, নীতীশ কুমার জনতা দল (ইউনাইটেড) গঠন করেন। জেডি(ইউ)-বিজেপি জোট বিহারে প্রতিদ্বন্দ্বী তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক নেতা লালু প্রসাদের আরজেডির দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করেছিল এবং ২০০০ সালের মার্চ মাসে তিনি প্রথমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে এই সরকার ছিল স্বল্পস্থায়ী কারণ এনডিএর কাছে পর্যাপ্ত বিধায়ক সংখ্যা না থাকায় ফের আরজেডির পথ প্রশস্ত হয়।
নীতীশ কুমার তখন অটল বিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন এবং রেলমন্ত্রী হিসাবে নতুন ভূমিকা পালন করেন। তাঁর অন্যান্য অনেক উদ্যোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, তিনিই প্রথম কম্পিউটারাইজড রেলওয়ে সংরক্ষণ চালু করেন।
আরও পড়ুন- রোজ ৬০ কিমি পাড়ি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা পড়ান ৯৩ বছরের এই অধ্যাপিকা
পিছিয়ে পড়া কুর্মি জনজাতির নেতা ২০০৫ সালে আবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ‘পিছিয়ে পড়া রাজ্য’ হিসেবে বিহারের দুর্নাম ঘুচিয়ে নীতীশ কুমার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করেন, পরিকাঠামো এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতিও করেন।
এনডিএর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনটি মেয়াদ কাটিয়ে নীতীশ কুমার গেরুয়া দলের সঙ্গ ত্যাগ করেন এবং ২০১৫ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লালু প্রসাদের আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেন। আবারও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতায় ফিরে আসেন তিনি। এই অস্বস্তিকর জোট ২০১৭ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ‘মহাগঠবন্ধন’ ছেড়ে ফের এনডিএতে যোগ দেন নীতীশ। এই গল্পই অবশ্য আজ উলটপুরাণ।