২২ এপ্রিল জঙ্গি হামলার সময় বৈসরন ভ্যালিতে ছিলেন কর্ণাটকের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র প্রসন্ন কুমার ভাট। এক্স হ্যান্ডেলে নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শেয়ার করে প্রসন্ন লেখেন, ভাই সেনা কর্মকর্তা, তাঁর তৎপরতায় সেদিন প্রায় ৪০ জনের জীবন বেঁচেছে। প্রসন্ন লিখেছেন, পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকার সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। সেদিন স্বর্গীয় সেই সৌন্দর্য রক্তের লাল রঙে ভাসছিল। ঈশ্বরের কৃপা, ভাগ্য এবং একজন সেনা অফিসারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং ক্ষিপ্রতাই আমাদের গোটা পরিবার-সহ ৩৫-৪০ জনের জীবন বাঁচিয়েছিল।
advertisement
প্রসন্ন লিখেছেন, প্রথমে দুটি গুলির শব্দ শোনা যায়। মুহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকা সম্পূর্ণ নীরব হয়ে গিয়েছিল। কী ঘটছে, সবাই সেটাই বোঝার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডেই ঘটনা স্পষ্ট হতে শুরু করে। তাঁরা দুটি মৃতদেহ দেখতে পান। ভাই ততক্ষণে বুঝতে পেরে গিয়েছে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সবাই আতঙ্কিত হয়ে এদিক-ওদিক ছুটতে শুরু করে। প্রবেশপথের দিকে ছুটে যান অনেকেই। আর সেখানেই জঙ্গিরা অপেক্ষা করছিল।
তিনি আরও লিখেছেন, “ভেড়ার দিকে যেমন বাঘের ছুটে যায়, ওরাও আমাদের দিকে এগিয়ে এল। আমরা অন্য দিকে দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম এবং ভাগ্যক্রমে সরু একটা রাস্তা খুঁজে পাই। আমাদের দেখে অনেকেই সেই রাস্তায় আসতে শুরু করে। ভাই দ্রুত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে আমাদের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে আরও ৩৫-৪০ জন পর্যটককে বিপরীত দিকে পরিচালিত করে। ভাই আতঙ্কিত সবাইকে নিচের দিকে দৌড়নোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সামনেই ঢাল ছিল, জল বইছিল, ফলে আমরা নিচের দিকে নেমেছি এবং জঙ্গিদের সরাসরি দৃষ্টি থেকে সরতে পেরেছি বুঝতে পারি।”
প্রসন্ন আরও লিখেছেন, “আমরা এক ঘণ্টা সেই নিচু এলাকায় কাদাজলের মেখে বসেছিলাম। বুঝতেই পারছিলাম না একই জায়গায় থাকব নাকি অজানা দিকে ফের দৌড়নো উচিৎ। এই সময় যারা বাড়িতে রয়েছে সকলের মুখ ভাসচভহিল চোখের সামনে, ভেবেছিলাম আর হয়তো শেষ দেখা হবে না। পোস্টে আরও লেখেন, ‘এটা এমন একটা স্মৃতি হয়ে গেল যা মুছে ফেলা যাবে না জীবনে কোনওদিন। দেশে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি প্রার্থনা করি কাউকে যেন এমন সন্ত্রাসের অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে না হয়।’
