সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, সাক্ষীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। “আমাদের গ্রাহকদের স্বার্থ আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতারণামূলক কার্যকলাপ ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করি,” ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা বলেন। জালিয়াতির বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থান জানিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, ‘‘যে কোনও জালিয়াতিমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমাদের শূন্য-সহনশীলতা বা জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে এবং তাই অভিযুক্ত কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’’
advertisement
একজন গ্রাহক যখন তাঁর ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি) সম্পর্কে জানতে ব্যাঙ্কে পৌঁছন, তখন জানিয়াতি ধরা পড়ে। এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক রামলাল সুমনের অভিযোগ, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লক্ষ টাকারও বেশি উধাও হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি যখন ব্যাঙ্কের শাখায় যেতাম তখন সাক্ষী গুপ্তার সঙ্গে আমার বেশ কয়েকবার দেখা হত। তিনি মেশিনের পরিবর্তে কলম দিয়ে ব্যাঙ্কের ডায়েরিতে বিস্তারিত তথ্য লিখতেন। এটি তিন থেকে চার মাস ধরে চলতে থাকে এবং আমি আমার মোবাইল ফোনেও লেনদেন সম্পর্কিত কোনও বার্তা পাইনি। নতুন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার আমাকে বলেছিলেন যে আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। কিন্তু কয়েক মাস আগে, আমি যখন আমার ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট নিতে আসি তখন বুঝতে পারি যে কিছু একটা ভুল হয়েছে। আমি ব্যাঙ্ক-কে বিষয়টি জানিয়েছিলাম এবং ম্যানেজার আমাকে পুরো জালিয়াতির বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং আশ্বাস দিয়েছিলেন যে আমার টাকা ফেরত দেওয়া হবে।”
সাব-ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম খান ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে সাক্ষী বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে তহবিল স্থানান্তর করেছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে, একজন বয়স্ক মহিলার অ্যাকাউন্টকে “পুল অ্যাকাউন্ট” হিসেবে ব্যবহার করে সেখানে টাকা পাঠানো হয়েছিল। ‘‘সাক্ষী তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বরগুলি এই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করেছিলেন এবং ৪ কোটি টাকারও বেশি টাকা তুলেছিলেন। এমনকি তিনি এমন একটি সিস্টেম তৈরিও করেছিলেন যা ব্যবহার করে তিনি তাঁর নিজের সিস্টেমেই OTP পেতেন৷ ফলে অ্যাকাউন্টধারীরা জালিয়াতির কোনও আভাস পর্যন্ত পাননি৷” তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে ।
অভিযোগ, সাক্ষী লেনদেনের জন্য ডেবিট কার্ড, ওটিপি এবং পিনের অপব্যবহার করেছেন। গ্রাহকদের সম্মতি ছাড়াই তিনি ৪০টি অ্যাকাউন্টে ওভারড্রাফ্ট সুবিধাও চালু করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি ৩১টি অ্যাকাউন্টের স্থায়ী আমানত অকালে বন্ধ করে দিয়েছেন, যার মাধ্যমে ১.৩৪ কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করা হয়েছে। পুলিশের মতে, অনেক লেনদেন কিয়স্ক ইনস্টলেশন এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এই প্রতারণা করা হয়েছিল। কমপক্ষে চারজন গ্রাহকের ডেবিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং এবং এটিএম কার্ড লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল টাকা।
রাজস্থানের চিত্তোরগড় জেলার রাওয়াতভাটায় তাঁর বাবা-মায়ের বাড়ি থেকে অভিযুক্ত রিলেশনশিপ ম্যানেজার সাক্ষী গুপ্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ডের পর তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।