কোঠাগুড়েম শহরের বাসিন্দা পিচেতি প্রসাদ তাঁর জীবন শুরু করেছিলেন পারিবারিক ব্যবসা দিয়ে। সামান্য আয়ে কাপড় সেলাই, মেরামতির কাজেই তাঁর সময় ব্যয় হতো। পারিবারিক উপার্জনের এই একটিমাত্র পথ খোলা ছিল পিচেতির কাছে। ১২ বছরের ব্যবসা ধাক্কা খেল করোনার কারণে। আর্থিক সমস্যা ধীরে ধীরে গ্রাস করতে লাগল তাঁর পরিবারকে। করোনা অতিমারির প্রভাবে আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত পিচেতি যখন বিকল্প আয়ের পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন, তখন একদিন মন্দিরে গিয়ে নারকেল নিবেদন করলেন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে। প্রার্থনা জানালেন তার আর্থিক পরিস্থিতি উন্নতির।
advertisement
মন্দিরে ভাঙা নারকেলের খোলা ছিটকে উঠতেই পিচেতির মাথায় খেলে গেল দারুণ বুদ্ধি। নারকেলের খোলার ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করলেন তিনি। যেমন ভাবা, তেমনই কাজ।
দীর্ঘদিন ধরেই নারকেলের খোলার ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করেছেন পিচেতি। সেখান থেকেই তিনি জানতে পারলেন বাজারে নারকেলের খোলার চাহিদা বেশ ভাল। বিপুল পরিমাণ নারকেলের খোলা সংগ্রহের জন্য তিনি মন্দির প্রশাসনের সঙ্গে একটি চুক্তি করে ফেললেন। তিনি তাঁর বাড়িতেই একটি কুটির শিল্প স্থাপন করেছিলেন যেখানে সবুজ নারকেলের শিষ শুকিয়ে কম তাপে পুড়িয়ে সেগুলিকে খোলায় রূপান্তর করা যায়।
আরও পড়ুন- মহারাষ্ট্রে ভেঙে পড়ল দোতলা বাড়ি, ধ্বংসস্তূপে অন্তত ১৫-২০ জনের আটকে থাকার আশঙ্কা
আরও পড়ুন- মাদকাসক্ত স্বামী সংসারে উদাসীন, ফলের দোকান চালিয়ে মেয়েদের বড় করছেন অশক্ত মা
যেটুকু সঞ্চয় ছিল তা বিনিয়োগ করেই তিনি শুরু করলেন নতুন যাত্রা। কেরল থেকে নারকেল কিনে অন্ধ্রপ্রদেশের নারকেল শিল্পের সঙ্গে একটি চুক্তি করে ফেললেন। এখন প্রতি মাসে কয়েক টন নারকেল সরবরাহ করে থাকেন পিচেতি প্রসাদ। নিজের সঙ্গে নিয়েছেন আরও দু’জনকে। এঁদের সকলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে পিচেতি প্রসাদের নতুন নারকেল শিল্প থেকে।
পিচেতি প্রসাদ বলেন, নারকেলের চাহিদা কিন্তু মরশুমের উপর নির্ভর করে। বর্তমানে এক কুইন্টালের দাম প্রায় ১২ হাজার টাকা। কিছু শিল্পে নারকেল খোলার প্রয়োজন। বাকি শাঁস কিনে নেবেন অন্য কেউ। তিনি বলেন, এই কাজ তিনি একাই করেছেন। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে তিনি একটি শিল্প প্রতিষ্ঠাও করতে পারেন যেখানে নারকেল শিল্পের কাঁচামাল যোগান দেওয়া যাবে এবং তাঁর মতো অনেক মানুষের কর্মস্থান সংস্থানও হবে।