কি এই ছায়াহীন দিন ? সূর্য ও পৃথিবীর কোনও অঞ্চল একই বিন্দুতে অবস্থান করলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। বছরে দু’বার, উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সময় এই ঘটনা ঘটে। কর্কটক্রান্তি রেখার দক্ষিণে অবস্থিত কোনও এলাকায় সূর্যের উত্তরায়ণ (২২ ডিসেম্বর থেকে ২১ জুন) ও দক্ষিণায়নের (২১ জুন থেকে ২২ ডিসেম্বর) সময় পৃথিবী পৃষ্ঠ সূর্যের সঙ্গে নির্দিষ্ট কৌণিক অবস্থানে হেলে থাকলে এমন ছায়াহীন দিন দেখা যায়।
advertisement
পৃথিবী পৃষ্ঠ সূর্যের সঙ্গে ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকলে সূর্যের আলো সরাসরি উল্লম্বভাবে পড়ে। ফলে প্রত্যেকের ছায়া তার পায়ের কাছে দেখা যাবে, পাশে পড়বে না। মনে হবে কোনও ছায়াই নেই। ২৫ এপ্রিল বেঙ্গালুরুতে ‘জিরো শ্যাডো ডে’ পালন হয় মহা সাড়ম্বরে।
মঙ্গলবার ১৩ জুন বেলা ১১:৩৬ মিনিটে শান্তিপুরের উপরে সূর্য লম্বকিরণ দেয়। আর এই ঘটনা চাক্ষুষ করতে শান্তিপুর বড় গোস্বামী পাড়ায়, রাজিব বসুর ‘সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড স্কাই ওয়াচিং সেন্টার’-এ কচিকাচাদের ভিড় জমে সকাল থেকেই। বাদ যাননি অভিভাবকরাও।
রাজীববাবু বলেন, ” কর্কটক্রান্তি রেখা এবং মকরক্রান্তি রেখার মধ্যবর্তী অংশে এমন ঘটনা, খুব সহজেই চাক্ষুষ করতে পারেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সূর্যের চারপাশে পৃথিবী যখন ঘোরে, তখন সূর্যের কিরণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অবস্থানে লম্বভাবে পরিবর্তিত হয়। যেমন ২১ জুন কর্কটক্রান্তি রেখার উপর ২১ মার্চ বিষুব রেখার উপরে। আবার ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তি রেখার উপর। ঠিক তেমনই, ২১ মার্চ থেকে ২১ জুন উত্তরায়ন অর্থাৎ বিষুব রেখার থেকে একটু একটু করে সূর্যের লম্ব কিরণ কর্কটক্রান্তি রেখার দিকে যেতে চলেছে। যা আমাদের নদিয়ার ধুবুলিয়ার উপর দিয়ে গিয়েছে। আর এই যাত্রাপথে, আজ অর্থাৎ ১৩ জুন, শান্তিপুর ২৩.২৫ ডিগ্রিতে অবস্থান করার জন্য ১১: ৩৬ মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের জন্য লম্ব কিরণ দেয়। আর তখনই নিজের ছায়া থাকে নিজেরই মধ্যে। এরপর একটু একটু করে স্থানভেদে তা যেতে থাকবে ধুবুলিয়ার দিকে অর্থাৎ কর্কটক্রান্তি রেখার দিকে।”
Mainak Debnath