শীত মানেই বাড়িতে হরেক মিষ্টির মেলা। শীতকালে বাজারে ওঠে নলেন গুড়। আর সেই গুড় পাক করে মুড়কি, মোয়া, নাড়ু, তিলের খাজা, কাঠিগজা একাধিক কিছু বানানো হয়। শীতের দুপুরে মোয়া খাওয়ার মধ্যে অন্যরকম একটা আমেজ থাকে। মোয়া ছাড়াও এই সময় গ্রামের দিকে বানানো হয় তিলের খাজা। শহরে এসব খাবারের চল তেমন না থাকলেও তিলের খাজা খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। এই সময় ট্রেনে,বাসেও বিক্রি বাড়ে তিলের খাজার।
advertisement
মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানার অন্তর্গত বাঁশগাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই এই তিলের খাজা তৈরি হয়ে আসছে। তিলের খাজা খেতে মজা এই কথা সকলেই জানেন। একটা সময় এই তিলের খাজা গ্রামের শিশুদের কাছেই প্রিয় খাবার হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে শহরতলি বা সদর শহরে এর কদর কম নেই। অনেক জায়গায় পথেঘাটে এই তিলের খাজার দেখা মেলে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন রকমারি খাবারের কারণে এই খাবারের কদর আজ আর নেই।
আরও পড়ুন : ব্লাড সুগারে জেরবার? ডায়েটে রাখুন এই ফল ও সব্জিগুলির রস, উপকারই পাবেন
তবে মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা ব্লকে বংশ পরম্পরায় এই তিলের খাজা এখনও পেশা হিসেবে ধরে রেখেছেন অনেকেই। লালগোলার সাধন দাস ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এই তিলের খাজা তৈরি করে আসছেন। তবে দাদু ও বাবার কাছে এই তিলের খাজা তৈরি করে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, আর তার পর থেকেই এই তিলের খাজা তৈরির কাজ নিজের রুটি রোজগার হিসেবে করে নিয়েছেন।
মুলত চিনিতে জল দিয়ে পাক দেওয়া থেকে খাজা তৈরির আগে চিনির মিশ্রণে পাক দেওয়া সব কিছু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে, যা করেন সাধন দাস। তবে সেই ভাবে লাভজনক ব্যবসা না হলেও এখনও এই খাজা তৈরিতে বেশ উৎসাহী সাধন দাস। তবে বর্তমানে চাহিদা বাড়ছে। এই খাজা তৈরি হয়ে মুর্শিদাবাদ নদিয়া ও বর্ধমানে রওনা দেয়। তবে আজও জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়ে এই তিলের খাজা তৈরি করে বিক্রি করছেন বেশ কিছু পরিবার।
আরও পড়ুন : শীতকালে কোলেস্টেরলের জ্বালায় হিমশিম? আপনার সমস্যার সমাধান লুকিয়ে শিমে
তবে তিলের খাজা তৈরির জন্য বেশি অর্থ পুঁজি দরকার পড়ে না। ব্যবসা বড় হলে পুঁজি দরকার পড়ে বেশি। যদিও শীতের মরশুমে ট্রেনে বাসে পথে ঘাটে এই তিলের খাজার কদর থাকে ভাল। তবে এই পেশাকে জীবিকা হিসেবে চালিয়ে যান সাধন দাস থেকে অনেকেই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে বেশ ভালই তিলের খাজা বিক্রি হচ্ছে।