"খাপছাড়া’ কাব্য গ্রন্থে রায়বেশে নাচ-এর প্রসঙ্গ এনে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। রায়বেশে বা রায়বেশে নাচে মুগ্ধ ছিলেন কবি। বাংলার লোক সংস্কৃতির অঙ্গ প্রাচীন এই নাচ প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, " রকম পুরুষোচিত নাচ দুর্লভ; আমাদের দেশের চিত্তদৌৰ্ব্বল্য দূর করতে পারবে এই নৃত্য ”বাস্তবিক এই নৃত্য দেখলে এটাকে নটরাজ শিবের রণতাণ্ডব নৃত্যের অবিকল প্রতিরূপ বলে মনে হয়। 'রায়’ কথাটির অর্থ বড় বা সম্ভ্রান্ত। ‘বেঁশে’ এর অর্থ বাঁশ ব্যবহারকারী বা বাঁশ থেকে তৈরি। বাঁশের তৈরি শক্ত লাঠি নিয়ে ভয়ঙ্কর রোমহর্ষক নাচ হত। তাই রায়বেশে। ডোম এবং অন্ত্যজ মানুষরাই মূলত এই সংস্কৃতির প্রধান ধারক। তাদের শারীরিক সক্ষমতায় মুগ্ধ হয়ে ভূস্বামীরা স্বীকৃতি দিতেন।
advertisement
আরও পড়ুন - দেবশ্রীর পর অগ্নিমিত্রা, তৃণমূলের 'সন্ত্রাস' মোকাবিলায় 'চুপ' নয়, জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি
মুলত গ্রাম বাংলার রায়বেঁশে মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা ও খড়গ্রামে প্রথম উৎপত্তি হয়। বর্তমানে এই রায়বেঁশে বোলান, নাটক সহ একাধিক লোক সংস্কৃতি কে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্য নিয়ে এই ইতি মধ্যেই বিভিন্ন সংগঠন কাজ করে চলেছে। তবে গ্রাম বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতি রায়বেঁশে নৃত্য যা মন কেড়েছে সকলের। একদা রণ পা-র তালে তালে রায়বেশে নৃত্য পরিবেশন করা হত, যা এক সময়ের প্রাচীন গ্রাম বাংলার অন্যতম সংস্কৃতি বলে পরিচিত ছিল। আজও মুর্শিদাবাদ জেলার বেশ কিছু ব্লকে রায়বেঁশে নাচের অনুশীলন করা হয়।
আরও পড়ুন - শুধু ভাইরা কেন! বোনেরা বাদ যাবে কেন ফোঁটা থেকে! তাই অভিনব উদ্যোগ
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে নিজের সংস্কৃতিকে ভুলে যাচ্ছেন অনেকেই। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে অনেক গ্রামীণ উৎসব। সেই সংস্কৃতিকে বহমান রাখতেই খড়গ্রাম থানার কালীপুজো কমিটির উদ্যোগে এই গ্রাম বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতি রায়বেঁশে নৃত্য পরিবেশন করা হল। আগামী দিনে মুর্শিদাবাদ জেলার হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করে তোলাই একমাত্র লক্ষ্য বলে দাবি উদ্যোক্তাদের ।
একদা এই রায়বেশে নৃত্য দেখতে খড়গ্রাম থানা এলাকায় বহু দুর দুরন্ত থেকে মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তবে সাধারণ মানুষ কে মনোরঞ্জন দিতে পেরে বেশ খুশি প্রকাশ করেছেন রায়বেশে শিল্পীরা।
Kaushik Adhikary