জানা যায়, মুর্শিদাবাদ জেলার সালার থানার অন্তর্ভুক্ত কাগ্রাম। এক কথায় জেলার প্রান্তবর্তী এক প্রাচীন বনেদি গ্রাম। রয়েছে বহু ব্রাহ্মণ, শাক্ত ও বৈষ্ণব পরিবার। মধ্য রাঢ়ের অতি প্রাচীন এই গ্রামের নামকরণ গ্রাম্যদেবী কঙ্কচণ্ডীর নামানুসারে। অতীতের কাগাঁ আজকের কাগ্রাম। পারিবারিক ও বারোয়ারি মিলিয়ে এখানে পুজোর সংখ্যা ২২টি। এই গ্রামে দুর্গাপুজো, কালীপুজো সহ অন্যান্য পুজো হলেও বর্তমানে গ্রামের মুখ্য আকর্ষণ সাবেক মেজাজের জগদ্ধাত্রী পুজো। এছাড়াও, পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মহাশয়বাড়ির পুজো। সাবেক বাংলা রীতির প্রতিমায় আজও দেখা যায় অভিজাত্যের ছোঁয়া। শোনা যায়, পরিবারের আদিপুরুষ নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের পুজো দেখে গ্রামে পুজোর প্রবর্তন করেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ভরতপুরের জজানে দোকান মালিকদের ওপর চড়াও ঘর মালিক! আহত ৫
পাশাপাশি, চার দশক ধরে হয়ে আসছে পালবাড়ির পুজো। আগে কলকাতার কুমোরটুলি থেকে এখানে প্রতিমা আনা হতো। এখানে কুমারী পুজা ও নারায়ণ সেবা করা হয়ে থাকে। একাদশীর দিন প্রতিমা বিসর্জন ও আতসবাজির প্রদর্শন উল্লেখ্য। এ ছাড়াও মিস্ত্রিবাড়ি, বন্দ্যোপাধ্যায়বাড়ি, দে-বাড়িতে পুজো হয়।
তবে শুধু সাড়ন্বরে পুজো নয়। কাগ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রাও সমান আকর্ষণীয়। এক একটি প্রতিমার শোভাযাত্রা হয় দীর্ঘ বিস্তৃত থাকে। সঙ্গে থাকে আলোকসজ্জা এবং নানা ধরনের বাজনা। যেমন ব্যান্ড তাসা ইত্যাদি। বিসর্জন উপলক্ষে মেলে প্রশাসনের বিশেষ সহযোগিতা। প্রতিটি পাড়ার প্রতিমার সঙ্গে থাকে পুলিশ বাহিনী।
গ্রামে জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে প্রতি বছর আলোকসজ্জায় থাকে অভিনবত্ব। তবে সময়ের সাথে আজকে এলইডি লাইটের মন্ডপ সজ্জা সজ্জিত করা হয়। লাইট দেখতে ভিড় জমান বহু সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুনঃ হলদিয়া-ফরাক্কা রাজ্য সড়কের সংস্কারের দাবিতে পথে নামলেন অধীর চৌধুরী
পুজোর দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে পুজোর শুরু হয়। পুজোয় থাকে চাল ও চিনির নৈবেদ্য, নানা ধরনের মিষ্টি। পুজোর ভাগেও থাকে বৈচিত্র। যেমন সপ্তমীতে থাকে ভাত, শাক, ভাজা মাছ, তরকারি চাটনি। অষ্টমীতে খিচুড়ি, পোলাও, ভাজা, তরকারি। আর নবমীতে থাকে লুচি, সুজি ইত্যাদি। তবে বুধবার জগদ্ধাত্রী পুজো হলেও এখন চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। দুইদিনের উৎসবে মেতে উঠবেন কাগ্রাম বাসিরা।
কৌশিক অধিকারী