মৃত ছাত্রীর পরিবারের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, মায়ের শাড়ি নিয়ে সে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য রিলস তৈরি করছিল। ওই ছাত্রী দিনরাত সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকত বলেও জানিয়েছে তার পরিজনরা। সেই নিয়ে বাড়িতে হামেশাই মা বকাঝকা করত। এদিন তার মা শাড়িটি কেড়ে নেন। এরপরই ঘরে ঢুকে সে দরজা বন্ধ করে দেয়। অনেক ডাকাডাকি করলেও আর দরজা খোলেনি। পরে পরিজনরা জোর করে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার দেহ উদ্ধার করে।
advertisement
আত্মঘাতী ছাত্রীটির বাড়ি বড়ঞার পারশালিকা গ্রামে। সে স্থানীয় নিমা বাহাদুরপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত। মেয়ের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় কথা হারিয়েছে মা। শোকে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের বাকি সদস্যরা। তাঁরা বুঝতে পারছেন না কোথা থেকে কী হয়ে গেল। ঘটনার খবর পেয়ে বড়ঞা থানার পুলিশ এসে পৌঁছয়। তারা ময়নাতদন্তের জন্য ওই ছাত্রীটির দেহ বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: মদ খেয়ে হেলমেট ছাড়া বাইক নিয়ে হিরোগিরি! ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় তিন যুবকের মৃত্যু
মুর্শিদাবাদের এই ছাত্রীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। বরং মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে পরিবার কিছু বললেই ছেলেমেয়েদের হঠাৎ করে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়ার ঘটনা গত কয়েক বছর ধরেই ক্রমশ বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে মনোবিদরাও যথেষ্ট চিন্তিত। লক্ষ্য করে দেখা গিয়েছে, স্মার্টফোনের সুফল ছাপিয়ে গিয়ে তা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপক কু-প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল গেমিং-এর ফাঁদে পড়ে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা সবকিছু ভুলে রাত দিন স্মার্টফোনেই বুঁদ হয়ে থাকছে। এই এই বিষয়টি তাদের এতটাই মজিয়ে রাখছে যে পরিবারের পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র নিষেধ করা হলে বা বকাঝকা করা হলেই তারা আত্মঘাতী হওয়ার মত চরম পদক্ষেপ করে বসছে।
এদিকে চোখের সামনে ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা না করে রাতদিন মোবাইল ফোন নিয়ে থাকতে দেখে মা-বাবারাও স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টা মেনে নিতে পারছেন না। সব মিলিয়ে স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার দাপাদাপিতে তরুণ প্রজন্মের জীবন যে বড়ই টালমাটাল তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল মুর্শিদাবাদের এই নাবালিকা।
কৌশিক অধিকারী