আমের জেলা আমবাগান কেটে সাফ করে দেওয়ায় চিন্তিত জেলার পরিবেশ প্রেমীরা। শুধু তা-ই নয়, এমন ঘটনায় প্রশাসনের নজরদারির অভাবের অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত দুই বছর আগে মালদহে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে প্রশাসনের কর্তাদের সতর্ক করে গিয়েছিলেন কোনওরকম ভাবেই যত্রতত্র আমগাছ কাটা যাবে না।
advertisement
এরপরেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি অনুমতি না নিয়েই আমবাগান ধ্বংস করছে একশ্রেণির মানুষ। পরিবেশবিদ রূপক দেব শর্মা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমবাগান কাটা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরও বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক বাগান ধ্বংস হচ্ছে আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।
পুরাতন মালদহের সাহাপুর পঞ্চায়েতে এলাকায় মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের দুই ধারে এই ভাবেই একের পর এক আম বাগান নষ্ট করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও গাছ কাটার জন্য বন দফতরের অনুমতি নিয়ে হয়। তবে গ্রামীণ এলাকায় তিনটি বা তার বেশি গাছ একসঙ্গে কাটতে বন দফতরের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু সাহাপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় একসঙ্গে ২০ থেকে ২৫ টি বা তার বেশি গাছ কাটা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘনিয়েছে নিম্নচাপ! তুমুল বৃষ্টিতে তোলপাড় বাংলার উত্তর-দক্ষিণ, আবহাওয়ার জরুরি খবর!
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন দফতরের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যার কারণেই রাতারাতি ধ্বংস করা হচ্ছে এই আম বাগানগুলি। পুরাতন মালদহ ব্লকের সাহাপুর পঞ্চায়েতের রায়পুর স্ট্যান্ডে গেলেই রাজ্য সড়কের দুই ধারেই বিঘার পর বিঘা জমি জুড়ে আমগাছ কাটার কাজ চলছে। বেপরোয়া ভাবে বিভিন্ন জাতের আমগাছ কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে।
এইসব জায়গায় বর্তমানে এখন জমির দাম কোটি কোটি টাকা। আর সেখানেই আম বাগান নিধন করেই প্লট হিসেবে জায়গা বিক্রির কাজ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। এভাবে একচ্ছত্র আমগাছ কাটা পড়লে উষ্ণায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ বাড়বে বলে অভিযোগ করেছেন মালদহের পরিবেশবিদদের সংগঠন।
সাহাপুর এলাকায় জাতীয় সড়কের বাইপাস রোড তৈরি হওয়ার পর থেকেই হুহু করে বাড়ছে জমির দাম। বিভিন্ন ধরনের কারখানা থেকে শুরু করে হোটেল, রেস্তরাঁ, গোডাউন, নার্সিংহোম জনবসতিপূর্ণ এই সাহাপুর এলাকার রাজ্য সড়কের ধারে গড়ে উঠতে শুরু করেছে। যার ফলে রাতারাতি আমবাগান কেটে সাফ করে দেওয়ার পর সেই জমি কোটি কোটি টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন নিশ্চুপ বলেও অভিযোগ উঠেছে। মালদহ বন দফতরের ডিএফও জিজু জেসফার জি. বলেন, ”বেশ কিছু মানুষ আমবাগান কাটার অনুমতি নিচ্ছে। তবে অনেকেই অনুমতি নিচ্ছে না। বেআইনিভাবে আমবাগান কাটা হলে আমরা আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
হরষিত সিংহ