শীতের মরশুম শুরু হতেই মালদহ শহরে বদলে যায় খাবারের দোকানের মেনু। তখন আর ঠান্ডা জাতীয় খাবার নয়, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গরম খাবারের পশরা নিয়ে হাজির হন বিক্রেতারা। এক সময় ছিল না চাহিদা, তবে গত কয়েক বছর ধরে শীত মানেই মালদহ শহরের বাসিন্দাদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেছে ভাক্কা পিঠে বা ভাপা পিঠে। গরম জলের বাষ্পে এই পিঠে ভাপ দিয়ে তৈরি হয়। তাই এই পিঠের নাম ভাপা পিঠা।
advertisement
তবে মালদহে এই পিঠে ভাক্কা পিঠে নামেই পরিচিত। বিকেল থেকে শুরু হয় বিক্রি। বর্তমানে গোটা মালদহ শহরে এই পিঠের চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের প্রায় শতাধিক দোকান তৈরি হয়েছে ভাক্কা পিঠের। শীত যত বৃদ্ধি পায়, এই পিঠের চাহিদাও বাড়তে থাকে । এমনটাই দাবি বিক্রেতাদের।
আরও পড়ুন: উল্লসিত বাসিন্দারা, এই প্রথম প্রচুর পরিযায়ী পাখি এল কালনার ছাড়িগঙ্গায়
চালের আটা বা চালের গুঁড়ো, নারকেল, ক্ষীর ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় পিঠে। অল্প জল দিয়ে প্রথমে চালের আটা ভিজিয়ে নেওয়া হয়। ছোট বাটিতে সেই চালের আটা দেওয়া হয়। মাঝে দেওয়া হয় নারকেল, ক্ষীর ও গুড়। তার উপর আবার আটা দেওয়া হয়। তার পর সেই বাটি বসিয়ে দেওয়া হয় গরম জলের পাত্রের উপর। গরম জলের বাষ্প বার হতে থাকে। সেই বাষ্পেই সিদ্ধ হয়ে তৈরি হয় এই পিঠে। সম্পূর্ণ নিরামিষ, এমনকি তেল ভাজা বা অন্য কোনও ভাবে তৈরি করা হয় না। দেওয়া হয় না কোনও ক্ষতিকারক উপাদান। তৈরির সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি করা হয়।
এই পিঠের চাহিদা প্রচুর। সকলের পছন্দের ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা দামের ভাক্কা পাওয়া যাচ্ছে। নিজেদের পছন্দের মতো কিনে খেতে পারেন সকলে। বিক্রেতাদের দাবি, এই পিঠে মূলত বাংলাদেশের খাবার। বাংলাদেশ এই পিঠের ব্যাপক চাহিদা। আগে মালদহে বিক্রি হত না । গত কয়েক বছর ধরেই মালদহে বিক্রি শুরু হয়েছে। এইখানকার বিক্রেতারা, ক্ষীর নারকেল নতুন সংযোজন করেছেন। তারপর নিজেদের মত তৈরি করে বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুন: বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে উঠেছিল নাবালিকা, বাড়িতে ফিরিয়ে আনল প্রশাসন
এই পিঠের বিক্রেতা বছরের অন্য সময়ে কেউ আখের রস, কেউ ফুচকা বা কেউ আবার ঠান্ডা পানীয় বিক্রি করেন। কিন্তু শীত পড়তেই শুরু করেন ভাক্কা পিঠে বিক্রি।বড় কোনও দোকান নয়, মালদহ শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তার ধারে বা বাজারে ছোট ছোট দোকান তৈরি হয়েছে ভাক্কা পিঠের। সারিবদ্ধ দোকানে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পথচলতি মানুষ কিনে খাচ্ছেন ভাক্কা পিঠে।