শিক্ষার মান উন্নয়ন, সামাজিক কাজে যোগদান-সহ বিভিন্ন বিষয়ের নিরিখে প্রতিবছর শিক্ষারত্ন পুরস্কার দেয় রাজ্য সরকার। শিক্ষক দিবসের দিন ৫ সেপ্টম্বর বাছাই করা শিক্ষকদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। যে তালিকায় এবার ঠাঁই পেয়েছে পাণ্ডবেশ্বরের নবগ্রাম (Nabagram) অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ দাঁ এর নাম।
অরুণ বাবুর হাতে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে 'কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন' অনিন্দ্য নারায়ণের চিঠি। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর জেলাশাসকের দপ্তরে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। এই খবর ছড়ানোর পরেই খুশির হাওয়া নবগ্রামের পড়ুয়া থেকে অভিভাবক মহলে। এই বিষয়ে পাণ্ডবেশ্বর চক্রের স্কুল পরিদর্শক সজল মন্ডল জানিয়েছেন, তার চক্রের স্কুলের শিক্ষক শিক্ষারত্ন (shikharatna) পাওয়ার খবরে তিনি গর্বিত।
advertisement
৩৩ বছরের শিক্ষকতা জীবন অরুণ বাবুর। একই বিদ্যালয়ে এই দীর্ঘসময় অতিবাহিত করেছেন তিনি। ১৯৮৮ সালে নবগ্রাম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন অরুণবাবু। ২০০০ সালে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। এখনও সেই দায়িত্বভার রয়েছে অরুণ দাঁ এর কাঁধেই। তাঁর সময়কালে নবগ্রাম অবৈতনিক বিদ্যালয়, 'নির্মল বিদ্যালয়', 'স্বচ্ছ বিদ্যালয়' পুরস্কার পেয়েছে। অরুণবাবুর হাত ধরেই দুর্গাপুর মহকুমার সেরা বিদ্যালয়ের শিরোপা পেয়েছে এই স্কুল।
বিদ্যালয়ের এক সহঃশিক্ষক জানিয়েছেন, অরুণ বাবুর উদ্যোগে, স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ-গান, আবৃত্তির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। করোনার সময় থেকে স্কুল বন্ধ থাকায়, পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সমাজ সংস্কারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।শিক্ষকতা ছাড়াও, সাহিত্যচর্চা এবং সমাজসেবামূলক ক্ষেত্রে অবাধ বিচরণ রয়েছে অভিজ্ঞ এই শিক্ষকের। তার লেখা একাধিক জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও একটি ষান্মাসিক পত্রিকার সম্পাদনা করতেন তিনি। সাহিত্যিকদের মত বিনিময়ের জন্য একটি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অরুণ দাঁ। সার্বিকভাবে, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের পাশাপাশি, এই খবরে খুশির হাওয়া সাহিত্যিক মহলেও।
এই বিষয়ে শিক্ষক অরুণদা সংবাদমাধ্যমের সামনে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেছেন, তাঁর কাজ শুধু শিক্ষকতা নয়, তাঁর কাজ মানুষ গড়ে তোলার। ছাত্রছাত্রীরা যাতে সামাজিক দিক থেকেও দায়িত্বশীল হয়, সেদিকেও নজর দেওয়া শিক্ষকদের দায়িত্ব। তিনি শুধু সেই দায়িত্ব পালন করেছেন।
Nayan Ghosh