ফিটনেস বজায় রাখতে যোগের বিকল্প নেই। শিক্ষানবিস হলে, হালকা ব্যায়াম দিয়ে অনুশীলন শুরু করা যায়। ইদানীং যোগাসনের পাশাপাশি আরও এক ধরনের ওয়ার্কআউট ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেটা হল পিলাটিস। অনেক সেলেব্রিটিও যোগাসনের সঙ্গে পিলাটিসে অনুশীলন করছেন। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, যোগাসন না কি পিলাটিস, কোনটা বেশি ভাল? উত্তর রইল এখানে।
যোগব্যায়াম কী: যোগ ভারতের সুপ্রাচীন পরম্পরা। ৫০০০ বছর আগে এ দেশের মাটিতেই এর উদ্ভব। ভঙ্গি, শ্বাসপ্রশ্বাস এবং ধ্যান – মোটামুটিভাবে এই তিনটি ধরন একত্রে যোগাসন। এটা শরীর সুস্থ রাখে তো বটেই, মানসিক সুস্বাস্থ্যও বজায় রাখে। তবে বিভিন্ন প্রকারের যোগ অনুশীলন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে হঠ যোগ, অষ্টাঙ্গ যোগ, বিন্যাস যোগ, আয়েঙ্গার যোগ, বায়বীয় যোগ ইত্যাদি।
advertisement
পিলাটিস কী: যোগব্যায়ামের বিপরীতে পিলাটিস একটি নতুন এবং আধুনিক অনুশীলন পদ্ধতি। ১৯২০ সালে জোসেফ পিলাটিস প্রথম ওয়ার্কআউটের এই পদ্ধতির প্রচলন করেন। মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত সৈনিকদের ফের নিজের পায়ে দাঁড় করাতে এই অনুশীলন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। বর্তমানে পিলাটিস এক ধরনের হালকা ব্যায়াম। পেশি টোন করতে এবং সহনশীলতা বাড়াতে পিলাটিস অনুশীলন করা হয়। এর লক্ষ্য হল, অঙ্গবিন্যাস এবং নমনীয়তা উন্নত করার সময় পেশিকে শক্তিশালী করা। পিলাটিস ২ প্রকারের, ম্যাট এবং রিফর্মার। পিলাটিস অনুশীলনে স্লাইডিং প্ল্যাটফর্ম এবং তার দিয়ে তৈরি বিশেষ এক ধরনের মেশিন ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই কালো দাগছোপ থেকে মুক্তি, এখনই ব্যবহার করুন অ্যালোভেরা, বেশি সময় নেই!
যোগব্যায়াম এবং পিলাটিসের তুলনা: যোগাসন এবং পিলাটিস দুটোই হালকা ধরণের ব্যায়াম। শ্বাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই এদের লক্ষ্য। যোগব্যায়ামে শ্বাস নেওয়া এবং শ্বাস ছাড়ার উপর জোর দেওয়া হয়। সঙ্গে শ্বাস ধরে রাখার সময়ের বিভিন্নতার উপরেও নজর দেওয়া হয়। পিলাটিসে ত্রিমাত্রিক শ্বাসপ্রশ্বাসের প্যাটার্ন মেনে চলা হয়। যেমন নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া, শ্বাসকে পাঁজরের পাশে নিয়ে যাওয়া এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়া। তবে যোগব্যায়ামের বৈচিত্র অনেক বেশি। পিলাটিসে ফোকাস করা হয় গতিশীলতার উপর।
কোনটা অভ্যাস করা উচিত: যোগব্যায়াম এবং পিলাটিস উভয়েরই বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ব্যায়ামের এই দুটো ফর্মের অনুশীলনেই শক্তি, ভারসাম্য, নমনীয়তা এবং ক্যালোরি-বার্ন হয়। কিন্তু যোগব্যায়ামে বৈচিত্র এবং মননশীলতা অনেক বেশি। পিলাটিসে পেশি তৈরি এবং শক্তিশালী করার উপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়। তাই লক্ষ্য কী, সেই অনুযায়ী ওয়ার্কআউট পদ্ধতি বাছাই করা উচিৎ। যদি কেউ পেশিবহুল শরীর চান, শরীরের নমনীয়তা বাড়াতে চান তাহলে পিলাটিস উপকারী। অন্য দিকে, শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্য ভাল রাখতে চাইলে যোগব্যায়াম অনুশীলন করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজে ক্যানসারের ঝুঁকি, এক্সারসাইজ করুন এভাবে
ওজন কমাতে কোনটা ভাল: দুটোতেই ওজন কমে। তবে ক্যালোরি বার্নের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ অনুসারে, ৫০ মিনিটের হঠ যোগ এবং পাওয়ার যোগব্যায়াম অনুশীলনে যথাক্রমে ১৪৪ ক্যালোরি এবং ২৩৭ ক্যালোরি বার্ন হয়। একই ভাবে ৫০ মিনিটের মাঝারি এবং তীব্র পিলাটিসে যথাক্রমে ১৭৫ এবং ২৫৪ ক্যালোরি বার্ন হয়।