প্রান্তিক এক গ্রামীণ এলাকায় রয়েছে ল্যাটেরাইট পাথরের নির্মিত এক ইতিহাস ক্ষেত্র। যা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু। কলকাতা থেকে খুব কাছেই মেদিনীপুর জেলার রয়েছে এমন সুন্দর একটি জায়গা, যা ইতিহাসবিদদের কাছে এক গবেষণার রসদ। বিভিন্ন ইতিহাসবিদের গবেষণায় একাধিক তথ্য উঠে এলেও সঠিক ইতিহাস এখনও জানা যায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ব্লকের গগনেশ্বর এলাকায় রয়েছে ঐতিহাসিক কুরুমবেড়া দুর্গ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ তারাপীঠে ভুলেও পরে যাবেন না ‘এই’ পোশাকগুলির একটিও, মন্দিরে ঢুকতে দেবে না কোনওভাবেই
যদিও নানান মতের পার্থক্য থাকলেও কেউ কেউ মনে করেন সেটি সেনা ছাউনি, আবার মনে করা হয় তা ঈশ্বরের স্থান। কেশিয়াড়ি বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরেই রয়েছে এই প্রাচীন নিদর্শন। সাধারণ মানুষ এই নিদর্শনকে দুর্গ বলেই চিহ্নিত করেন। তবে গবেষকদের মধ্যে, আসলে এই স্থাপত্য কেন গড়ে উঠেছিল তা নিয়ে নানার মত থাকলেও বর্তমানে এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কানের আকৃতিই জানান দেয় মানুষের ব্যক্তিত্ব! আপনার সঙ্গীর কানের গঠন ঠিক কেমন? মিলিয়ে দেখে নিন
গগনেশ্বর এলাকায় রয়েছে প্রাচীন এই দুর্গ কুরুমবেড়া। বিশাল দুর্গের বেশ কিছুটা অংশ এখনও রয়ে গিয়েছে। ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি একটি স্থাপত্য। পাথর কেটে কেটে সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই দুর্গের দেওয়াল। চারিদিক ঘেরা সুসজ্জিত দেওয়াল বা প্রাচীরের মধ্যে রয়েছে তিনটি গম্বুজ আকারের স্থাপত্য। চারিদিকে রয়েছে একাধিক খিলান। কেউ কেউ মনে করেন এটি একটি মন্দির বা দেবালয় ছিল। যার চারিদিকে প্রাচীর বেষ্টিত একাধিক কুঠুরি ছিল। যেখানে তীর্থ যাত্রীরা বিশ্রাম নিতেন। পরবর্তীতে মোগল এবং তারপরে মারাঠারা এটিকে সেনা নিবাস বা ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এটি কুরুমবেড়া দুর্গ বা ফোর্ট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আবার কেউ কেউ মনে করেন চতুর্দিক বিস্তৃত প্রাচীর ঘেরা এই দুর্গ আসলে পান্থশালা। যেখানে ব্যবসা-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আসা কিংবা ধর্মীয় স্থানে আসা মানুষেরা সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে বা বিনামূল্যে থাকতে পারতেন।
তবে এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিয়ে সাধারণ মানুষ ও গবেষকদের মধ্যে নানার মত থাকলেও বর্তমানে বেশ কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত। স্থানীয়দের মতে কিছুটা অংশ মাটির তলায় চাপা পড়েছে। তবে শুধু ঘুরতে আসা নয়, ঘুরতে এসে জানুন এই স্থাপত্যের ইতিহাস। তাই সপ্তাহ শেষে ছুটির দিনে ঘুরে দেখুন এই জায়গা, একদিকে যেমন ইতিহাস জানতে পারবেন তেমনইশহরের কচকচানি ছেড়ে গ্রামে এলেই মন ভাল হয়ে যাবে। এখানে আসতে চাইলে আপনারা বাসে কিংবা ট্রেনে চেপে আসতে পারেন। ট্রেনে এলে আপনাকে নামতে হবে খড়গপুর স্টেশনে, সেখান থেকে বাসে আসতে হবে কেশিয়াড়ি। সেখান থেকে টোটো তে চেপে আসতে পারবে এখানে। গুগল লোকেশন: https://maps.app.goo.gl/nuHTvCp66CeSyv4GA
রঞ্জন চন্দ