এমনিতেই ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে নানান কাহিনী উঠে আসে পশ্চিম মেদিনীপুরকে ঘিরে। ঘাটাল দাসপুর সহ নানান জায়গাই যেদিকে তাকাবেন ইতিহাস প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। প্রাচীন দাসপুরের ইতিহাস যদি বলতে হয় তাহলে একসময় এই এলাকা বেশ সমৃদ্ধ ছিল রেশম শিল্পে। তখন রমরমা বাজার দাসপুরে। জাঁকিয়ে চলত কাঁসাপিতলের ব্যবসা চলত। তখনকার দিনের ধনী ব্যক্তিরা এই টেরাকোটার মন্দির নির্মাণ করতেন।আসলে এখানকার মানুষ ধার্মিক ছিল বলেই মানা হয়। এখানে প্রচুর প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ আজও দেখা যায় । বিশেষ করে ধনী ব্যবসায়ীরা তাদের উপার্জিত অর্থ কাজে লাগাতেন এইসব মন্দির নির্মাণে। ১৭১৬ খ্রিষ্টাব্দ,তারপর থেকেই টেরাকোটা ও পোড়ামাটির কাজ দিয়ে শোভিত মন্দিরের নির্মাণ বহুল অর্থে প্রচলিত হয়।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
দাসপুরের বিখ্যাত গোপীনাথের মন্দির সবথেকে প্রাচীন মন্দির যা অবস্থিত দাসপুরের স্কুলের পাশেই। এটিও নির্মিত ওই সময়ের মধ্যেই। এছাড়াও লক্ষ্মী জনার্দন,সুভাশীষ রায় বাড়ির মন্দির ও নবকুমার পাল বাড়ির মন্দির সবই প্রাচীন ও টেরাকোটার কাজ করা মন্দির। যার অধিকাংশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও অবশিষ্ট অংশের কাজ বিশেষ সৌন্দর্য্যমন্ডিত ও লক্ষ্যনীয়।এছাড়াও দাসপুরের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু প্রাচীন মন্দির যেখানে লক্ষ্য করা যায় টেরোকোটার কাজ।কাজেই দাসপুরও এককালে এই শিল্পে বেশ পটু ছিল তার ছোঁয়া আজও রয়ে গেছে।আসলে টেরাকোটা শিল্প হল একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প, যেখানে মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি, অলঙ্করণ, পাত্র এবং স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়। টেরাকোটা শব্দটি ইতালীয় শব্দ “terra” এবং “cotta” থেকে এসেছে, যার অর্থ হল “পোড়া মাটি”।
টেরাকোটা শিল্পে মাটিকে ছাঁচে ফেলে বিভিন্ন আকার দেওয়া হয় এবং তারপর আগুনে পোড়ানো হয়, যাতে তা শক্ত এবং মজবুত হয়।সেই কারণে এইসব মন্দিরের নকশা গুলো আজও রয়েছে।
দাসপুরের প্রতিটা মন্দিরই আজ মানুষের কাছে আবেগসম ও দর্শনীয় স্থান। আর পুরোনো দিনের স্থাপত্য মানেই সেখানে রয়েছে ইতিহাস।সব জায়গার সম্পর্কে লিখিত না থাকলেও লোক মুখে প্রচারিত রয়েছে নানান কথাও।তাই এসব দেখে ও শুনে যদি ইতিহাসের নেশা পায় অবশ্যই ঘুরতে আসতে পারেন আপনিও
মিজানুর রহমান





