পূর্ব বর্ধমানের সিমলা আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দা জগন্নাথ মাণ্ডি। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার পাশাপাশি প্রতিকূল পরিবেশের মাঝেই বড় হয়ে উঠেছে সে। মা-বাবা কেউই থাকেনা তার সঙ্গে৷ ঠাকুরমা ও দাদার কাছেই বড় হয়ে ওঠা তার। এছাড়াও তার এই যুদ্ধে পাশে থেকেছে বাকি পরিবারের সদস্যরা তাই তার অদম্য মনের জোরে আজ মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের পর এবার কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছে সে। জগন্নাথ জানায়, শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তার এই লড়াইয়ে অনেক সহযোগিতা করেছেন।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
নুদিপুর ভুপেন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দিরের ছাত্র ছিল জগন্নাথ। সে যাতে পা দিয়ে লিখতে পারে তাই বিদ্যালয় তার বসার জন্য বিশেষভাবে তৈরি বেঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তার পা দিয়ে লেখা শুরু ছোটবেলা থেকেই। জগন্নাথ যখন পড়াশোনা শুরু করে তাকে পা দিয়ে প্রথম লিখতে শেখান তারই এক শিক্ষিকা। তিনিই জগন্নাথকে পায়ে পেন ধরিয়ে লেখা শিখিয়েছেন। পড়াশোনা করে শিক্ষক হয়েই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চায় জগন্নাথ। পাশাপাশি তার মত যারা আছে সকলের উদ্দেশ্যে সে বার্তা দিতে চায় যে, মনের জোর আর ইচ্ছা শক্তি থাকলে যে কোন পরিস্থিতিকেই জয় করা সম্ভব তাই মনের জোর না হারিয়ে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যেতে হবে। তার মতো বিশেষভাবে সক্ষম অনেকের কাছেই আজ অনুপ্রেরণা জগন্নাথ মাণ্ডি।
আরও পড়ুন Healthy Living: প্রেগন্যান্ট হতে সমস্যা হচ্ছে? ঘরেই করুন এই কাজ, ফল মিলছে হাতেনাতে
জগন্নাথ মাণ্ডির ঠাকুরমা বলেন, জগন্নাথ যখন প্রথম জন্মগ্রহণ করে তখনই তাকে দেখে একজন বলেছিলেন ঘরে ভগবান এসেছে আর সেই থেকেই ওর দাদু নাম রাখে জগন্নাথ। জগন্নাথের জীবন যুদ্ধে এই সাফল্যে খুশি তিনিও। চান জগন্নাথ যাতে এভাবেই আরও এগিয়ে যেতে পারে। জগন্নাথের এই জয় শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং সমাজের সেই সমস্ত মানুষের প্রতি এক বার্তা, যারা শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার অন্তরায় বলে মনে করেন। জগন্নাথ মাণ্ডির দৃঢ়তা ও ইচ্ছাশক্তি সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তার জীবনযুদ্ধ অনেকের কাছেই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।জগন্নাথের জীবনের এই সাফল্য তার একার নয়, বরং তার পাশে থাকা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।
সায়নী সরকার