বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমানোর (Weight loss) মূল মন্ত্রই হল- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করা। দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে, আসলে মানুষ খাবার হিসেবে কতটা ক্যালোরি (Calorie) গ্রহণ করছে, সেটার উপর ওবেসিটি এবং অন্য শারীরিক সমস্যা নির্ভর করে না। আমাদের শরীরের হরমোনগুলি কী ভাবে দেহে ফ্যাট জমিয়ে রাখছে, তার উপর নির্ভর করছে ওবেসিটি। এটা নিয়ে রীতিমতো বিতর্কও রয়েছে। অনেকেই ভাবেন যে, শরীরের ওজন বৃদ্ধি আর হ্রাস শুধুমাত্র ক্যালোরির উপরই নির্ভর করছে। কিন্তু গোটা দুনিয়ার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, শরীরের ওজন বৃদ্ধি আর হ্রাসের ক্ষেত্রে ইনসুলিনের (Insulin) মতো হরমোনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের মত: বেশি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট ওবেসিটির জন্য দায়ী:
এখন যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে, তাতে বলা হয় যে, খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করা ক্যালোরির উপরেই নির্ভর করে ওজন বৃদ্ধি এবং হ্রাস। গোটা দিনে কেউ যদি ক্যালোরি ঝরানোর তুলনায় বেশি পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করেন, তা হলে তাঁর ওজন বেড়ে যায়। আর ক্যালোরি ঝরানোর তুলনায় কেউ যদি কম পরিমাণে ক্যালোরি গ্রহণ করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর ওজন কমবে। এই তত্ত্বকে ক্যালোরি ইন, ক্যালোরি আউট (CICO) থিওরি বলা হয়।
আরও পড়ুন : একটানা বসে কাজ করেন? হৃদরোগ এড়াতে এখনই বদলে ফেলুন দৈনন্দিন জীবনের এই কুঅভ্যাসগুলি
তবে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা জোর দিচ্ছেন অন্য একটি তত্ত্বের উপর। ওবেসিটির কার্বোহাইড্রেট-ইনসুলিন মডেল ওজন কমাতে কার্যকর বলে দাবি গবেষকদের। এই মডেল অনুযায়ী, আমাদের দেহ কী ভাবে বডি ফ্যাট জমিয়ে রাখবে অথবা কী ভাবে বডি ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলবে- এই দুই বিষয় নির্ভর করে আমাদের শরীরের হরমোনের মাত্রার উপর। প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrate) জাতীয় খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সঙ্গে সঙ্গে শরীরকে ইনসুলিন নিঃসরণ করানোর ইঙ্গিত দেয়। আর দিনের পর দিন বেশি মাত্রার ইনসুলিন নিঃসরণের কারণে শরীরও এই হরমোনের প্রতি অত্যন্ত কম মাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে আরও বেশি পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসরণ হয়।
আরও পড়ুন : কলকাতার রসগোল্লার স্বাদে মুগ্ধ ব্রিটিশ হাইকমিশনার, বাংলায় ট্যুইট করলেন আনন্দবার্তা
ইনসুলিনের মাত্রা বাড়লে দেহে বাড়তি মেদ সঞ্চিত হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় ৷ ফলে শরীরে কোনও রকম অতিরিক্ত ক্যালোরি না-গ্রহণ করেও বেশি মাত্রায় ফ্যাট জমতে শুরু করে।
এই তত্ত্ব যদিও একেবারেই নতুন নয়, আগে থেকেই প্রচলিত। তবে ক্যালোরি গ্রহণের তুলনায় এই তত্ত্ব কতটা কার্যকর, তা নিয়ে অবশ্য বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়নি। অবশ্য অন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা গিয়েছে, প্রসেসড খাবার (Processed food) ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার ওবেসিটির জন্য দায়ী।