চূড়া শৈলীর এমন রাসমঞ্চ খুবই কম দেখা যায়। কিশোরমণির স্মৃতি বিজড়িত এই সৌধ সংরক্ষণের দাবি তুলেছিলেন জেলার গবেষকরা। কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রশাসনিক উদ্যোগ দেখা যায়নি। শিলদার নতুন প্রজন্মের অনেকেরই এই রাসমঞ্চের ইতিহাস অজানা। বর্তমানে রাসমঞ্চের ভিতরেও আগাছা ও আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। শিলদার তরুণ সংঘের সম্পাদক নিমাই চন্দ্র নাদ বলছেন, “রাসমঞ্চ, হাতিদুয়ার, সংস্কার প্রয়োজন। ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। সংস্কার হলে পর্যটকদের অন্যতম স্থান হয়ে উঠবে।”
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
প্রাসাদ চত্বরে রাধা-কৃষ্ণের মন্দির এবং বাইরে রাসমঞ্চ তৈরি করান রানি। কিশোরমণির মৃত্যুর পরে প্রাসাদ চত্বরটি মেদিনীপুর জমিদারি কোম্পানির হাতে চলে যায়। চুরি যায় বিগ্রহগুলি। বাম আমলে প্রাসাদ চত্বরের একাংশ জমি খাস হয়ে যায়। এখন প্রাসাদের অস্তিত্ব নেই। তবে প্রাসাদের প্রধান তোরণ ‘হাতিদুয়ার’টি রয়েছে।
বছর দশেক আগে প্রাসাদ চত্বরের জমিতে তৈরি হয়েছে বেলপাহাড়ি ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার (বিএলআরও) অফিস। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, “রাসমঞ্চ সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। সংস্কার না হলে ঐতিহাসিক রাসমঞ্চ ধ্বংস হয়ে যাবে।” বেলপাহাড়ির বিডিও সুমন ঘোষ বলেন, “বিষয়টি স্থানীয়রা জানিয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখছি, কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন Success Story: অনুপ্রেরণার অপর নাম জগন্নাথ! প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পা দিয়ে লিখেই কলেজে ভর্তির আবেদন
১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বিরোধী চুয়াড় বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছিল অবিভক্ত মেদিনীপুরে। শিলদা অঞ্চলে তখন রাজত্ব করছিলেন রাজা মানগোবিন্দ রায়। ১৮০৬ সালে মানগোবিন্দের মৃত্যুর পরে শিলদা পরগনার অধীশ্বরী হন তাঁর রানি কিশোরমণি। চুয়াড় বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনিও। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কিশোরমণি রাজত্ব করেন। তিনি প্রাসাদের মূল ফটকের বাইরে রাসমঞ্চ তৈরি করিয়ে ছিলেন। প্রাসাদের ভিতরে ছিল কিশোর-কিশোরী ও পার্শ্বদেবতার মন্দির। রাস উৎসবের সময় মন্দিরের বিগ্রহদের নিয়ে আসা হত রাসমঞ্চে। সে সব এখন অতীত।
তন্ময় নন্দী