গভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া মিনিস্ট্রি অফ এডুকেশন এবং গভমেন্ট অফ জাপান মিনিস্ট্রি অফ এডুকেশন স্পোর্টস কালচার টেকনোলেজি এর মেল বন্ধনে এই কর্মসূচি। এই কর্মসূচি পরিচালিত হয় এশিয়া প্যাসিফিক কালচারাল সেন্টার ফর ইউনেস্কো দ্বারা। যদিও তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক, কিন্তু পরিবেশ রক্ষা করতে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সিদ্ধার্থ বাবু। তিনি মনে করেন পৃথিবী একটাই, যেভাবে পরিবেশে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, আগামী হতে পারে মারাত্মক ভয়ঙ্কর।
advertisement
তিনি মনে করেন এখনই পরিবেশ রক্ষা করার সময় এসেছে। সেই দিক থেকে পরিবেশ রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ। তাই নানাভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। সেন্টার ফর এনভারমেন্টাল এডুকেশন ইস্ট (সি ই ই ) এর ডিরেক্টর রিমা ব্যানার্জি সহযোগিতায় সেই কাজ আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এবার জাপানী স্কুল পরিদর্শনের পর, সেই কাজ আরও সহজ হতে পারে বলেই মনে করছেন তিনি।
এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আর জাপানী শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে অঢেল ফারাক। সেখানে শিক্ষা ব্যবস্থা যেমন যথাযথ ডিজিটালাইজেশন। সেইসঙ্গে শিশু শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মূল্যবোধের শিক্ষা। প্রকৃতির কোলে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলিতে দুই থেকে ছয় বছরের শিশুরা নিজে হাতে ফসল ফলানোর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছে। কিভাবে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে পশু পাখির যত্ন নেওয়া সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করছে শিশুরা। এই সমস্ত শিক্ষা বা জ্ঞান প্রয়োজন শিশু বয়স থেকেই। শিশু বয়স থেকে স্কুলে শেখানো হচ্ছে মূল্যবোধ। একইসঙ্গে প্রতিটা পেশার প্রতি কদর এবং কোনও কাজও যে ছোট নয়, সে বিষয়ে শিক্ষা। ছবি বা পাঠ্য বই এর তথ্য অনুযায়ী শিক্ষার সঙ্গে লাইভ বিভিন্ন প্রদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে নিজস্ব জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে বিশ্লেষণ করার শিক্ষা গ্রহণের নানা কৌশল রয়েছে স্কুল গুলিতে। ছাত্র অবস্থা থেকেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা করার ক্ষমতা প্রয়োজন সেইদিক গুরুত্ব রেখে প্রাইমারি স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে নিয়মিত বিশেষ কর্মশালা। এছাড়াও প্রতিটি স্কুল ছুটি হবার শেষ কিছুটা সময় ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্লাসরুম থেকে বিদ্যালয়ের প্রতিটি স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে করছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী জানান, ভারতীয় শিক্ষক হিসেবে প্রথমবার জাপান যাওয়া। সমস্ত শিক্ষককে ভারতীয় দূতাবাসে আমন্ত্রণ জানানো হয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অন্যরকম অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষক হিসাবে ছাত্রদের জন্য অনেক কিছু শেখা। দুই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বহু তফাৎ রয়েছে। যদিও বেশ কয়েক বছর অনলাইনে শিক্ষা দীক্ষায় আদান প্রদান চলছে। আমাদের দেশে কোন স্কুলে কি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশের স্কুল পর্যন্ত জানতে পারেনা। কিন্তু জাপানে প্রতিটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রজেক্ট এর মত কাজ ইউনিভার্সিটি নজরে। সেই সমস্ত প্রজেক্ট ডেভেলপমেন্ট করতে ইউনিভার্সিটি সহযোগিতা করছে। তাতে আরও বেশি জ্ঞান সঞ্চিত এবং শিক্ষা অর্জনে সুযোগ পাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিকাঠামোর দিক থেকে আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে থাকলেও স্কুল ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার শিক্ষা সহ সহ বেশ কিছু বিষয় ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে খুব সহজেই তুলে ধরা যেতে পারে। রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং, এয়ার পলিউশন পলিথিন পলিউশন এর মত নানা দূষণ বিষয়কে আরও বেশি করে গুরুত্ব দিয়ে নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। ইতিমধ্যেই সেই কাজ বেলেঘাটা লী কলিন্স হাই স্কুলে ছাত্রদের নিয়ে সেই কাজ শুরু হয়েছে। স্কুল লাগোয়া বাজার থেকে শাক পাতার অবশিষ্ট সংগ্রহ করে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি। এই সমস্ত কাজে দারুণ আগ্রহ দেখা দিয়েছে ছাত্রদের মধ্যে। ছাত্রদের উৎসাহ এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক, অন্যান্য সহ শিক্ষকদের সহযোগিতায় নানা বাধা কাটিয়ে নিজেদের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে চলেছে বেলেঘাটা লী কলিন্স হাই স্কুল। দেশের একমাত্র স্কুল হিসেবে প্রথম জাপানি স্কুলের সঙ্গে গত তিন বছর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নানা বিষয়ে আদান প্রদান চলে।
রাকেশ মাইতি