কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত গনগনি পৌঁছানো যায় খুব সহজেই। পথে শাল, মহুয়া, কাজুবাদাম ও বেতগাছের ছায়া যেন যাত্রীদের স্বাগত জানায়। শিলাবতী নদীর তীরে দাঁড়িয়ে চোখে পড়ে লালচে মাটির খাদের পর খাদ—যেন প্রকৃতির হাতে গড়া এক শিল্পকর্ম। গনগনির আসল সৌন্দর্য ধরা পড়ে বিকেলের দিকে, যখন সূর্যাস্তের সময় আকাশে সোনালি আর কমলা আলো পড়ে নদীর জলে। সেই মুহূর্তে শিলাবতী নদীর রূপ মোহিত করে দেয় প্রত্যেক দর্শনার্থীকে। তবে সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে হলে সূর্য ডোবার আগে নদীখাত থেকে উপরে উঠতে হয়, কারণ খাদের নিচে সূর্যাস্তের দৃশ্য সম্পূর্ণ দেখা যায় না।শীতের মরশুমে এই এলাকা পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত পিকনিক স্পটে।
advertisement
দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন বনভোজনের আনন্দ নিতে। একদিকে কাজুবাদামের জঙ্গলে পিকনিকের উচ্ছ্বাস, অপরদিকে শিলাবতীর ধারে হেঁটে বেড়ানো—দু’য়ের মেলবন্ধন গনগনিকে করেছে অনন্য। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গনগনিতে তৈরি হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, যা এই এলাকার আকর্ষণ আরও বাড়িয়েছে। পরিবেশপ্রেমী ও আলোকচিত্রীদের কাছে এই স্থানটি এখন স্বর্গসমান। পাখির কূজন, লাল মাটির ধুলো, নদীর ঢেউ আর সূর্যের রঙের খেলায় গনগনি যেন নিজের গল্প বলে যায় প্রতিটি আগন্তুকের কাছে।
আরও পড়ুন: গণেশের চায়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়, এখানে যে চায়ের সঙ্গে ‘টা’ ফ্রি, আড্ডা মারার অভিনব সঙ্গী
যারা প্রকৃতিকে ভালবাসেন, নিস্তব্ধতা আর প্রাকৃতিক রূপে হারিয়ে যেতে চান, তাঁদের জন্য গড়বেতার গনগনি এক আদর্শ গন্তব্য। লাল মাটির এই ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ রাজ্যে গেলে একবার অন্তত আপনার মনও বলবে — “এত সুন্দর প্রকৃতি, বাংলার বুকেই লুকিয়ে ছিল এতদিন!”





