ত্বকের সমস্যা মানেই হল অ্যালার্জি, চুলকানি, র্যাশ ইত্যাদি। অ্যালার্জি (Allergy) শুধু ত্বকেই নয়, চোখেও হতে পারে। এমনটাই জানাচ্ছেন হায়দরাবাদের ম্যাক্সি ভিশন আই হসপিটালের (Maxi Vision Eye Hospital Hyderabad) ক্যাটারাক্ট ও লাসিক সার্জন ডা. শেষচলম নীতিন (Dr. Seshachalam Nitin)!
কিন্তু চোখে অ্যালার্জি (Eye-allergies) হলে তা বোঝার উপায় কী? ডা. শেষচলম জানিয়েছেন, চোখে অ্যালার্জির প্রধান উপসর্গগুলি হল চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ জ্বালা অথবা চুলকানি, চোখ দিয়ে জল পড়া, অতিরিক্ত পরিমাণে পিচুটি, চোখ কটকট করা, চোখের পাতায় ফোলা ভাব ইত্যাদি।
advertisement
আরও পড়ুন- করোনার প্রভাবে চোখে দেখা দেয় এই উপসর্গগুলো, সতর্ক থাকুন
অনেক সময় আবার চোখের অ্যালার্জির সঙ্গে শ্বাসজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম নাক দিয়ে জল পড়া, হাঁচি, ঠান্ডা লেগে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট এমনকী বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ত্বকে র্যাশ পর্যন্ত বেরোতে পারে।
গ্রীষ্মকালে বাতাসে নানা রকম ধুলোর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা, পরাগ বা রেণু ভেসে বেড়ায়। মূলত এই কারণেই অ্যালার্জির প্রকোপ গ্রীষ্মকালে বেড়ে যায়। আর কিছু কিছু মানুষের শরীরে এই ধরনের কণা প্রবেশ করা মাত্রই নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।
গরমের দিনে অ্যালার্জির হাত থেকে বাঁচতে তাই কিছু উপায় মেনে চলতে হবে। দেখে নেওয়া যাক, এই বিষয়ে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ।
অ্যালার্জেন থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। সাধারণত আমাদের চারপাশে সব থেকে বেশি যেসব অ্যালার্জেন ঘুরে বেড়ায়, সেগুলি হল ফুলের রেণু, ধুলোকণা, ঝুরো মাটি প্রভৃতি।
গরমের দিনে বাইরে বেরোলেই সানগ্লাস ও মাস্কে মুখ ঢাকতে হবে। এখন কোভিড প্রোটোকলের জন্য মাস্ক পরা আবশ্যক। তাই এই সুবিধা তো আছেই! আসলে মাস্ক আর সানগ্লাস পরলে চোখ-নাক-মুখ ঢাকা থাকে, ফলে অ্যালার্জেন প্রবেশ করতে পারে না।
সকাল ও সন্ধ্য়ার বাতাসে অ্যালার্জেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই সম্ভব হলে দিনের এই দুই সময় বাড়ির বাইরে পা না-রাখাই ভালো।
দূষণ সৃষ্টিকারী বিষয়গুলি থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন- গাড়ির ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া থেকে অ্যালার্জির উপসর্গ কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে।
শুধু বাইরেই নয়, অন্দরেও এই সব বিষয় মেনে চলতে হবে। ঘর ভালো ভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে ধুলো না-জমতে পারে। কয়েক দিন অন্তর বিছানার চাদর পাল্টাতে হবে। সেই সঙ্গে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি মেশিনও পরিষ্কার রাখতে হবে।
আরও পড়ুন- স্নান করতে হবে না! শুধু শরীরের এই ৩ অংশ প্রতিদিন পরিষ্কার করতে ভুলেও ভুলবেন না!
যাঁদের বাড়িতে পোষ্য রয়েছে, তাঁদেরকে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ পোষ্যের লোম থেকেও ছড়াতে পারে অ্যালার্জি।
এখানেই শেষ নয়, যাঁরা লেন্স পরেন, তাঁদের অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে। কারণ লেন্সের পৃষ্ঠতলে অ্যালার্জেন জমে। যা অ্যালার্জির উপসর্গকে আরও গুরুতর করে তুলতে পারে।
এছাড়াও চোখের জন্য ডা. শেষচলমের পরামর্শ, লেন্স পরার অভ্যেস না-রাখাই ভালো। তার জায়গায় চশমা ব্যবহার করা উচিত। যদি তা একান্তই সম্ভব না-হয়, তাহলে এমন লেন্স ব্যবহার করতে হবে, যা দিনের দিন ব্যবহার করেই ফেলে দেওয়া যায়।
আর সেই সঙ্গে চোখ ডলে চুলকানো উচিত নয়। তার পরিবর্তে চোখ চুলকালে আইসপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। একটা পরিষ্কার কাপড়ে কয়েকটা বরফের টুকরো জড়িয়ে নিয়ে ৫ মিনিট মতো চোখের পাতায় রাখতে হবে। এতে চুলকানি, চোখের লালচে ভাব কেটে যাবে এবং আরামও পাওয়া যাবে।