কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই রূপ হারিয়ে ফেলেছিল চুপি। বিলজুড়ে কচুরিপানার দখলের কারণে কমেছিল পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। কচুরিপানার কারণে নৌকা মাঝিদেরও দারুণ সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান হলেও কোনও উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। শেষমেশ নিজেরাই চাঁদা তুলে কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজে নেমেছিলেন মাঝিরা। কিন্তু এবারের দৃশ্য একেবারে অন্যরকম। টানা বৃষ্টিপাত ও প্রবল হাওয়ার দাপটে নিজে থেকেই ভেসে গেছে কচুরিপানা! এখন বিলজুড়ে আবার দেখা মিলছে পরিষ্কার জলের, আর সেই সঙ্গেই ফিরছে প্রকৃতির পুরানো ছন্দ।
advertisement
আরও পড়ুন: চন্দননগর, কৃষ্ণনগর নয়! বর্ধমানেও জমজমাট জগদ্ধাত্রী পুজো, ২৬ ফুটের প্রতিমা ঘিরে আনন্দের শেষ নেই
পূর্ব বর্ধমানের ওই এলাকার নৌকা মাঝি পীযূষ হালদার বলেন, “সামনের অংশের পানা পরিষ্কার হয়েছে বৃষ্টির জল উঠে যাওয়ার জন্য এবং হাওয়ার কারণে। তবে হাওয়া দিলে আবার চলে আসার সম্ভাবনা আছে। সামনের দিকে কিছু পানা এখনও আছে সেগুলোও কিছুদিন পর আমরাই পরিষ্কার করবো।” ইতিমধ্যেই দেখা মিলছে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির। অস্প্রে, গাডওয়াল, রেড ক্রেস্টেড পচার্ড-সহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে এই জায়গায়। নৌকা মাঝিদের মুখেও ফিরেছে হাসি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
নৌকা মাঝি মুজিবুল শেখ বলেন, “আশা করছি এবারে পাখি এবং পর্যটক দুটোই বাড়বে। পর্যটকরা ভালভাবে ঘুরতে পারবেন। বছরখানেক আগে যেভাবে পাখি দেখা যেত,ছবি উঠতো সেইরকম এবারেও হবে আশা করছি।” তাঁদের কথায়, “বছরখানেক আগেও যেখানে জল দেখা যেত না, এখন সেই বিল আবার আগের মতো ঝকঝকে, নিশ্চয়ই এবার পাখি আসবে অনেক।”
তবে সমস্যা পুরোপুরি কাটেনি। ছাড়িগঙ্গার ভেতরের কিছু অংশ এখনও কচুরিপানায় ঢাকা। মাঝিরা জানিয়েছেন, অচিরেই নিজেরাই সেই অংশগুলোও পরিষ্কার করবেন। তবে আশঙ্কা একটাই, আবার যদি হাওয়ার দাপটে পানা সামনে চলে আসে, তাহলে ফের শুরু হবে বিপত্তি। স্থানীয়দের দাবি, জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণে প্রশাসনের নজরদারি একান্ত প্রয়োজন। একাধিকবার আশ্বাস মিললেও কচুরিপানা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এখনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে আপাতত চুপির আকাশে ভাসছে আশার রঙ। প্রকৃতির নিজের হাতে গড়া এই ‘পরিষ্কার অভিযান’ এর ফলে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ছাড়িগঙ্গা বিল। এবছর পাখি এবং পর্যটকদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়বে বলেই সকলে আশাবাদী।





