বয়স ৬০ পেরিয়েছে, তবুও আজও দাপটের সঙ্গে একের পর এক দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে চলেছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা মল্লিকা পাল। জেলায় মহিলা মৃৎ শিল্পী কেবল একজনই। তিনি মল্লিকা। প্রতি বছরের মতো, চলতি বছরও ৩০টি দুর্গা প্রতিমা বানিয়েছেন তিনি। বয়সকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এখনও পুরোদস্তুর কাজ করে চলেছেন একষট্টির মল্লিকা।
দুর্গাপুজো প্রায় এসেই গেল। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি বাসট্যান্ডে এখন দিনরাত এক করে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করছেন মল্লিকা পাল। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই, দিনরাত এক করে চলছে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ। ৬১ বছর বয়সেও তিনি ৩০টি প্রতিমা তৈরি করছেন। যা অর্থ উপার্জন হবে তা দিয়েই বছরভর চলবে সংসার।
advertisement
মল্লিকা পালের কথায়, শ্বশুরবাড়িতে প্রতিমা তৈরি করা হত। সেখান থেকেই শেখা। স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে প্রতিমা বানানো শুরু করেন তিনি। এখনও খড় বাঁধা থেকে শুরু করে চক্ষুদান, সবটাই করেন নিজে হাতেই। পাশাপাশি সংসার। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বনেদি বাড়ি থেকে শুরু করে সর্বজনীন পুজো, সবেতেই শোভা পায় মল্লিকা পালের হাতে তৈরি প্রতিমা। ইদানীং বয়সজনিত কারণে খানিক অসুস্থ, কিন্তু শারীরিক অসুস্থতাকে উপেক্ষা করেও বিরামহীন মল্লিকা। নিজেকে এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছেন প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
দুর্গাপুজোর আর কয়েকদিনই তো বাকি। ফলে ব্যস্ততা পৌঁছেছে চরমে। এখন একের পর এক অর্ডার পুজো কমিটির হাতে তুলে দিয়েও ভার মুক্ত হতে পারবেন না মল্লিকা দেবী। কারণ লক্ষ্মী আর কালী মূর্তির কাজ সবে শুরু হয়েছে।
মল্লিকা দেবী বলেন, “প্রথমে স্বামী ও পরে শ্বশুরমশাইয়ের কাছ থেকেই প্রতিমা তৈরির কাজ শিখি। ছোটবেলায় মাটির কলশি ও হাঁড়ি তৈরি করতাম। বিয়ে হওয়ার পর দেখি এখানে প্রতিমা তৈরি হয়। শ্বশুরমশাই নিজে হাতে করে প্রতিমা বানানো শিখিয়েছিলেন।”
মুর্শিদাবাদ, কৌশিক অধিকারী