চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তীব্র রোদে দীর্ঘ ক্ষণ বাইরে থাকার ফলে শরীর ব্যাপকভাবে গরম হয়ে যায়। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা ব্যায়াম করলেও এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। গ্রীষ্মের দিনে অতিরিক্ত তাপমাত্রাজনিত কারণে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যেতে পারে। শরীরে তাপমাত্রা পৌঁছে যেতে পারে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। এই সমস্যাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক। যদিও হিট স্ট্রোক আরও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলিও জেনে রাখতে হবে রোগীকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য।
advertisement
চিকিৎসকদের মতে, হিট স্ট্রোক হলে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করেই অনেকটা বেড়ে যায়। শরীরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। রোগীর ব্যাপক ঘাম হয়। শ্বাস প্রশ্বাস খুব দ্রুত হয়ে যায়। অত্যধিক হারে বেড়ে যায় হার্টবিট রেট। তাছাড়া রোগীর মধ্যে তীব্র বমি বমি ভাব বা বমি হতে দেখা যায়। রোগী অদ্ভুত ব্যবহার করতে থাকেন। অনেক সময় খিচুনি হয়। মাথা ব্যাথা অনুভব হতে পারে। রোগী বারবার সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারেন। এই অবস্থায় রোগীকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে না গেলে জীবন নিয়ে টানাটানি হতে পারে।
আরও পড়ুন : চরম প্রতিকূলতা পেরিয়ে ৮০৯১ মিটার উচ্চতার অন্নপূর্ণার শিখরে বঙ্গকন্যা পিয়ালী বসাক
আপনার আশপাশে কারওর হিট স্ট্রোকের এই লক্ষণগুলো থাকলে, সঙ্গে সঙ্গে তার জন্য পদক্ষেপ করতে হবে। কী করা উচিত সেগুলি জেনে রাখা ভাল। প্রথমত রোগীকে ফাঁকা জায়গায় শুইয়ে দিতে হবে। রাস্তায় হলে রোগীকে গাছের তলায় শুইয়ে দিতে হবে। রোগীর পোশাক হালকা করে দিতে হবে। মাথায় ঢালতে হবে ঠান্ডা জল। সঙ্গে সঙ্গে ফ্যান, এসি চালিয়ে দিতে হবে। বা মাথার উপর হাওয়া করতে হবে। চোখে, মুখে, ঘাড়ে দিতে হবে ঠান্ডা জল। পর্যাপ্ত পরিমাণে তাকে জল পান করাতে হবে। এইটুকু করতে পারলেই রোগীর প্রাণ বেঁচে যাওয়া সম্ভবনা অনেকখানি বেড়ে যাবে। রোগী একটু সুস্থ বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন : পর্যটকদের জন্য সুখবর! কার্শিয়াঙের মুকুটে নতুন পালক
মূলত অত্যধিক গরমের জন্য হিট স্ট্রোক হয়। স্বাভাবিকভাবেই গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করা ছাড়া এর দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই। প্রথমত প্রয়োজন ছাড়া প্রখর রোদে বেরোনো উচিত নয়। বাইরে বেরোতে হলেও তীব্র রোদে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। অবশ্যই হালকা ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে হবে। বাইরে বেরিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘন ঘন খেতে হবে জল। পারলে ইলেক্ট্রোলাইট মেশানো জল খেতে হবে। রাস্তায় বেরতে হলে কিছুক্ষণ করে বিশ্রাম নিতে হবে।
একটানা পরিশ্রমের কাজ করা চলবে না। করা যাবে না গরমের সময় অতিরিক্ত ব্যায়াম। পারলে জল আছে এমন ফল বেশি করে খেতে হবে। যেমন শসা, তরমুজ। ছাতা অথবা টুপি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও সম্ভব হলে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বাইরে না বেরনো ভালো। বয়স্কদের একটু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সকাল এবং সন্ধ্যার দিকে সারতে হবে বাইরের প্রয়োজনীয় কাজ। নিজের ইউরিনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ইউরিন বেশি হলুদ হলে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। কফি, মদ্যপান ইত্যাদি থেকে এই সময় যতটা দূরে থাকা যায়, ততই ভাল।